বলিউড আমিরের জন্মদিন

বলিউড, বিনোদন

ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 01:58:30

আমির হোসেন খান থেকে এখন তিনি শুধুই আমির খান। বলিউডের রূপালি পর্দার তারার মেলায় তিনি আছেন আমির-ওমরাহের মতোই শ্রেষ্ঠত্বে। স্বতন্ত্র ও অভিজাত অভিনেতার ঐশ্বর্যময় প্রতিচ্ছবি আমির খানের জন্মদিন বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ)।

ফিল্ম থেকে দূরের কেউ ছিলেন না আমির। নাটক, অভিনয় মিশে ছিল রক্ত, এতিহ্য ও উত্তরাধিকারের পরম্পরায়। চাচা নাসির হুসেনের 'ইয়াদোঁ কি বারাত' (১৯৭৩) ছবিতে আমির একজন শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় জীবন শুরু করেন। তবে পেশাগতভাবে তার অভিনয় জীবনের সূচনা 'হোলি' (১৯৮৪) ছবির মাধ্যমে শুরু হয়েছিল।

‘ইয়াদোঁ কি বারাত’ ছবির দৃশ্যে আমির খান

 

আশি দশক আমির খানের প্রকৃত উত্থানের যুগ। সে সময় আমিরের প্রথম বাণিজ্যিকভাবে সফল ছবি চাচাতো ভাই মনসুর খানের 'কেয়ামত সে কেয়ামত তক', যে ছবিতে আমিরের সঙ্গে নায়িকা ছিলেন জুঁহি চাওলা।

এই ছবির জন্য তিনি 'শ্রেষ্ঠ নবাগত অভিনেতা' হিসেবে 'ফিল্ম ফেয়ার' পুরস্কার পান। মজার বিষয় হলো, পরে ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মোট সাতবার মনোনয়ন পেলেও তিনি ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার জেতেননি। অবশেষে ১৯৯৬ সালে ‘রাজা হিন্দুস্তানি’ ছবির জন্য তিনি আবার 'ফিল্ম ফেয়ার' শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পান।

আমির খান তার ফিল্ম ক্যারিয়ারে চারটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং সাতটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার এবং মনোনয়ন অর্জন করেছেন। ভারত সরকার কর্তৃক ২০০৩ সালে পদ্মশ্রী এবং ২০১০ সালে পদ্মভূষণ পদকে সম্মানিত করা হয় তাকে। আমিরের মতো এতো সম্মাননা খুব কম অভিনেতাই পেয়েছেন।

'কেয়ামত সে কেয়ামত তক' ছবির দৃশ্যে সহশিল্পী জুহি চাওলার সঙ্গে আমির খান

 

নিপুণ অভিনেতা আমির মাঝে মাঝে গান গেয়ে থাকেন। তিনি নিজস্ব উদ্যোগে চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা আমির খান প্রোডাকশন্স প্রতিষ্ঠা করেছেন, যাতে অনেকগুলো ব্যতিক্রমধর্মী চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন তিনি। তার ব্যতিক্রমী চরিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট হলো, তিনি বেশি ছবি করেন না। বেছে বেছে বছরে দুই-তিনটি ছবি দিয়েই মাৎ করেন বলিউডের বক্স অফিস।

ব্যবসায়িক সাফল্য, কাহিনির গভীরতা, অভিনয় শৈলীর নান্দনিকতার মেলবন্ধন আমির খান। এতো কম ছবি করে এতো বেশি জনপ্রিয়তা, বাণিজ্যিক সাফল্য ও পুরস্কার আর কেউ পান নি। দক্ষিণের বিশিষ্ট পরিচালক মণিরত্নমের সঙ্গে আমিরের ছবিগুলো ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে।

‘রাজা হিন্দুস্তানি’ ছবির দৃশ্য

 

১৯৬৫ সালে জন্ম নেয়া এই চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, পরিচালক, চিত্রনাট্য লেখক এবং টেলিভিশন উপস্থাপককে ভারতীয় চলচ্চিত্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং প্রভাবশালী অভিনেতা হিসেবে গণ্য করা হয়। বলিউডের ফিল্মি সাম্রাজ্যে দাপটের সঙ্গে প্রভাব বিস্তারকারী খানদের (ইউসুফ খান তথা দিলীপ কুমার, আমজাদ খান, কাদির খান, সঞ্জয় খান) সার্থক উত্তরসুরি হিসেবে শাহরুখ খানের সঙ্গে মিলিতভাবে আমির খানকে বিবেচনা করা হয়।

নিটোল ব্যক্তিগত চরিত্র, স্বচ্ছতা ও ব্যক্তিত্বের কারণে আমির খান হলেন বলিউডের অন্যতম ব্যতিক্রমী চরিত্র, যাকে ফিল্মি স্ক্যান্ডাল, গসিপ বা গুজব স্পর্শ করতে পারেনি। ভারত সরকারের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মানসূচক 'পদ্মশ্রী' এবং 'পদ্মভূষণ' পদকের পাশাপাশি ২০১৩ সালের এপ্রিলে টাইম ম্যাগাজিনের তালিকার তিনি বিশ্বের ১০০ সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন। আমির ছাড়া যে তালিকায় বলিউডের আর কেউ স্থান পান নি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর