অবশেষে মুক্তি পাচ্ছে ‘শঙ্কর মুদি’

সিনেমা, বিনোদন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, কলকাতা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 04:20:53

কাহিনি, চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের সিনেমা, ‘শঙ্কর মুদি’ মুক্তি পাচ্ছে ১৫ই মার্চ। কোনো এক অজানা কারণে ছবির মুক্তি দীর্ঘদিন ধরে আটকে ছিল। তবে সব বাধা কাটিয়ে অবশেষে ছবিটি মুক্তি পেতে চলেছে ছবিটি। শঙ্কর মুদি ছবিটি তৈরি হয়েছে একটি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সামাজিক গল্পের উপর ভিত্তি করে। আর পাঁচটা ছবির মত বক্স অফিসে মুনাফার কথা মাথায় রেখে মেক করা হয়নি ছবিটি।

গল্পের মূল বিষয়, গ্লোবালাইজেশনের যুগে খুব সহজেই হাতের নাগালে পাওয়া যায় বিদেশি পণ্য। অপরদিকে রাজপথে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে পাঁচতারা শপিং মল। কোনো রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবা প্রয়োজন মনে করছে না পাড়ার ছোট ছোট দোকানগুলোর ভবিষ্যৎ। ফলে ক্ষতির মুখে পড়ছে পাড়ার দোকনগুলো। দোকানগুলোর সঙ্গে অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে দোকানদারের পরিবার। ফলে একটা পাড়ার ভবিষ্যতও অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে ধীরেধীরে, ভেঙে যাচ্ছে পাড়ার একতা। নিউক্লিয়ারে পরিণত হচ্ছে পাড়ার পরিবারগুলো। সেই অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ যুক্ত পরিবারগুলোর গল্প উঠে এসেছে শঙ্কর মুদির হাত ধরে। সিনেমাটি ইতিমধ্যে কান ফিল্মফেসটিভ্যাল ও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দর্শকদের প্রশংসা পেয়েছে। এবার ১৫ই মার্চ মুক্তি পাচ্ছে সর্বসাধারণের জন্য।

ছবিটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন কৌশিক গাঙ্গুলী। আছেন অঞ্জন দত্ত, যীশু সেনগুপ্ত, রুদ্রনীল, শাশ্বত ও সৌমিত্র চ্যাটার্জী। সঙ্গীত পরিচালনায় কবীর সুমন এবং কন্ঠ দিয়েছেন প্রতীক চৌধুরী ও সুমন নিজেও। স্টার কাস্ট ও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রের সাফল্যই বলে দিচ্ছে শঙ্কর মুদি এক ও ভিন্ন বাংলা ছবির ইতিহাসে। ছবিটি মুক্তির আগে আয়োজন করা হয়েছিল এক সংবাদ সম্মেলনের, যেখানে উপস্থিত ছিলেন- কৌশিক গাঙ্গুলী, অনিকেত চট্টোপাধ্যায়, শ্রীলা মজুমদার এবং ছবির সংগীত পরিচালক কবীর সুমনসহ প্রমুখেরা।

শঙ্কর মুদি চরিত্রের অভিনেতা কৌশিক গাঙ্গুলী জানালেন, এটা আমার কাছে খুবই আনন্দের বিষয়, আমার বাবা যন্ত্র সংগীত শিল্পী ছিলেন। মানুষকে আনন্দ দিতেন। সেই টাকায় আমরা খেয়েপড়ে বড় হয়েছি। আমার স্ত্রীও অভিনেত্রী। আমি নিজেও ছবি পরিচালনা করি এবং অভিনয় করি। আর আমার পুত্র অভিনয় করা শুরু করেছে। আমরা মানুষকে আনন্দ দিই। এটাই আমাদের পেশা। আমি যেমন ছবি পরিচালনা করে আনন্দ পাই তেমনি অভিনয় করেও আনন্দ পাই। শঙ্কর মুদি এমন একটা ছবি যেটা বাদ দিয়ে আমাদের সমাজ সম্পূর্ণ হয় না। যে ছবিটা না দেখলে আপনাদের জীবনেও কিছু একটা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। আপনি সমাজের সব কিছুতেই সরাসরি যোগদান করতে পারেন না, সেই জায়গায় এই ছবি আপনাদেরকে একটা সুযোগ করে দেবে, পরোক্ষভাবে, এর সহযোগী হয়ে ওঠার। আপনারা অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের এই ছবিটি দেখলে বুঝতে পারবেন, এই চরিত্রগুলি আমাদের সমাজের মধ্যেই রয়েছে। এটা আমাদের সমাজের আর পাঁচ জন মানুষের জীবনের ঘটনা।

এবিষয়ে পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায় জানালেন, বহুদিন ধরে এরকম একটা ছবি বানানোর ইচ্ছা ছিল কারণ, এই শঙ্কর মুদি গল্পটি আমার পাড়ারই গল্প। এই ছবির প্রত্যেকটা চরিত্রকেই আমি নিজের চোখে দেখেছি এবং এদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের দেশে যখন প্রথমবার ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট আসা শুরু হলো সেই সময় থেকেই কিন্তু বেশ কিছু মানুষজন কাজ হারানো দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই প্রেক্ষাপটেই আমার এই ছবির গল্প। এটা ঠিক যে ছবিটা ২০১৬ সালে তৈরি হয়েছিল, তারপর বিভিন্ন কারণে প্রযোজকদের ঘরে ছবিটি পড়েছিল। তবে অবশেষে ২০১৯ এর ১৫ই মার্চ ছবিটি মুক্তি পেতে চলেছে এটাই আমাদের কাছে আনন্দের। কৌশিক গাঙ্গুলীকে এই ছবিতে ভাবার একমাত্র কারণ হলো তিনি এই বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ একজন অভিনেতা।



অভিনেত্রী অঙ্কিতা জানালেন, এই ছবিটি আমার খুব ছোট্ট একটা চরিত্র। এই ছবিটা করার একমাত্র কারণ হলো ছবির মাধ্যমে যে বক্তব্যকে তুলে ধরা হয়েছে সেটা এক কথায় অসাধারণ। ছবিতে আমার চরিত্রের নাম সীতা। মেয়েটি সেই পাড়ার একটি সাধারণ ঘরের মেয়ে। সে হঠাৎ করেই পাড়ার এক অটোরিকশা চালকের প্রেমে পড়ে যায়। সে বাড়ির কাউকে কিছু না বলেই বিয়ে করে নেয় এবং বিয়ের পর সুখী হয় না। এবং সে শঙ্কর মুদি দোকান থেকে বিষ কিনে আত্মহত্যা করে ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর