আলাদা অধিদফতর হচ্ছে না এনআইডি

বিবিধ, নির্বাচন

ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 04:42:13

জাতীয় পরিচয় (এনআইডি) নিবন্ধন অনুবিভাগকে আলাদা অধিদপ্তর করার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ফলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এনআইডি’কে আলাদা অধিদফতর করার প্রস্তাবনাটি আপাততবাস্তবায়ন হচ্ছে না।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ইসি থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এনআইডি’র জন্য ২৭৭টি পদ সৃষ্টির প্রস্তাব পাঠানো হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বিশাল কর্মযজ্ঞ সফলভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনের একটি উইং হিসেবে এনআইডি অনুবিভাগের প্রস্তাবিত জনবল কাঠামো দ্রুত অনুমোদন প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে অনুবিভাগের প্রস্তাবিত জনবল প্রদান করা সম্ভব না হলে প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনের অধীন একটি অধিদপ্তর হিসেবে প্রস্তাবিত জনবল জরুরি অনুমোদন প্রদানের অনুরোধ করা যাচ্ছে।’

ইসি’র ওই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চিঠিতেএনআইডি’কে আলাদা অধিদফতর করা যায় কি-না, সে বিষয়ে মতামত জানতে চায়।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৮ এপ্রিল) কমিশনের ৪৭তম সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়। সেখানে এনআইডি’কে আলাদা অধিদফতর করতে আইনগতসহ নানা ঝামেলার বিষয়টি উঠে আসে। এছাড়াও অনেক আইন পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে, যেটা এই মুহূর্তে করা সম্ভব নয়। তবে বৈঠকে কমিশনাররা এনআইডি’কে আলাদা অধিদপ্তর করার চেয়ে লোকবল বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

এ বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘কমিশনের জনবল সংকট রয়েছে। তাই আমরা আপাতত সেটি সমাধান করতে চাই। এরপর পৃথক অধিদপ্তর করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।’

ইসি বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচন কমিশন সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান নয়। কিন্তু অধিদপ্তর সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন দপ্তর। ফলে পৃথক অধিদপ্তর করে এনআইডিকে সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন করার সুযোগ নেই। যা করার সেটা আইনের মধ্যে থেকেই করতে হবে। ফলে এই মুহূর্তে আরো জনবল নিয়োগ দিয়ে এনআইডি উইংয়ের সমস্যা সমাধান করা হবে। আর মাঠ পর্যায়েও এই উইংকে আরো শক্তিশালী করা হবে।

এছাড়াও বৈঠকে এনআইডি অনুবিভাগের গতি বাড়াতে প্রয়োজনে কাজের সমন্বয় করারবিষয়টিও আলোচনা করা হয়। এক্ষেত্রে ভোটার নিবন্ধন-সংশোধন, ইভিএম ও ট্রেনিংয়ের কাজগুলো আলাদাভাবে দায়িত্ব বণ্টন করার প্রস্তাব করা হয়। তবে জনবল নিয়োগের পর এসব প্রস্তাবনা নিয়ে আবার আলোচনা করা হবে।

কমিশনের একজন যুগ্ম সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘এনআইডি অনুবিভাগ নির্বাচন কমিশনের আইনের আদলে গঠিত। নিয়ম অনুযায়ী এভাবেই চলবে। এটি সরকারের অধিদফতরের আইনে কিংবা রুলস অব বিজনেসে গঠন করা যাবে না। কারণ কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় করেই এনআইডি বিভাগ চলবে। অধিদপ্তর হলে এই বিভাগ সরকারের অধীনে চলে যাবে।’

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০১০ এর চতুর্থ অধ্যায়ে বলা হয়েছে, কমিশন, সরকারের অনুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে এবং অতিরিক্ত ঐচ্ছিকভাবে ইলেকট্রনিক গেজেটে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণ করতে বিধি প্রণয়ন করতে পারবে। এছাড়া কমিশন, সরকারি গেজেটে এবং তদতিরিক্ত ঐচ্ছিকভাবে ইলেকট্রনিক গেজেটে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণ করতে প্রবিধান প্রণয়ন করতে পারবে।

আর প্রথম অধ্যায়ে বলা হয়, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী যে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার কাছে সংরক্ষিত তথ্য-উপাত্ত, ইত্যাদি কমিশনকে দিতে বাধ্য থাকবে এবং কমিশনের দায়িত্ব পালনে কমিশনকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর