মসিক নির্বাচন: প্রচারণায় হামলার অভিযোগ, সত্যতা পায়নি পুলিশ

, নির্বাচন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ | 2024-03-04 22:56:36

আগামী ৯ মার্চের ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) নিবার্চনকে সামনে রেখে তুঙ্গে রয়েছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। মেয়র পদে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তিনজন প্রার্থীর প্রচারণায় সরগরম ভোটের মাঠ। রোববার (৩ মার্চ) রাতে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থীর গণসংযোগে হামলার অভিযোগ উঠে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থীর কর্মীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তবে এর সত্যতা পায়নি পুলিশ।

হামলার ঘটনায় সোমবার (৪ মার্চ) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে শঙ্কার কথা জানান ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী এহতেশামুল আলম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত রোববার দিনব্যাপী প্রচারণা শেষে রাতে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাঁশবাড়ি কলোনীতে প্রচারণার সময় ঘড়ি ঘড়ি স্লোগানে আমিসহ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এসময় স্থানীয়রা আমাকে আগলে ধরায় রক্ষা পাই। হামলা নেতৃত্ব দিয়েছে জাহাঙ্গীর মৃধা, শামীম, সুজন, শ্রবান, শান্ত এবং অমিতসহ ৩০ থেকে ৩৫ জন। এসময় অতর্কিত হামলা করে তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। এবিষয়ে স্থানীয় রেদওয়ান আহমেদ নামে একজন থানায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। পুলিশ ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

এহতেশামুল আলম বলেন, নিবার্চন কমিশনেও অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তারা যদি সিসি টিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে তাহলেই ঘটনা কারা ঘটিয়েছে তা বেরিয়ে আসবে। যখন ঘোড়া প্রতীক জয়ের দ্বারপ্রান্তে যাচ্ছে তখনেই একের পর এক হামলা চালানো হচ্ছে। এর আগে আমার গণসংযোগে পাথর নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এতে আমার তিন কর্মীর আহত হয়। তারা ভাবছে এসব করলেই আমি পিছিয়ে যাবো, কিন্তু আমিতো পিছিয়ে যাওয়া মতো মানুষ না। আমি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পিছিয়ে পরার জন্য নির্বাচনে দাঁড়ায়নি। সংসদ সদস্য মোহিত উর রহমান শান্তর উৎসাহে আমি প্রার্থী হয়েছি। ন্যাক্কার জনক ঘটনার পরপরেই মোহিত উর রহমান শান্ত ও হাতি প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাকেদুল হক খান মিল্কী টজু আমার খোঁজ নিয়েছেন। ইকরামুল হক টিটু ইচ্ছা করলে আমার খোঁজ নিতে পারতেন কিন্তু তিনি তা করেননি। তারা লুটপাটসহ সন্ত্রাসী রাজনীতি করে ময়মনসিংহের পরিবেশ উত্তপ্ত করছে। আমি আমার নেতা কর্মীদের সবসময় শান্ত রাখার চেষ্টা করছি। আইনকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিচারের ভার তাদের কাছে দিয়েছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ—সভাপতি অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একেএম সাজ্জাদ জাহান শাহীন, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক বুলবুল আহমেদ, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শরাফ উদ্দিন আহম্মেদ বায়েজিদ, উপ—দপ্তর সম্পাদক মোস্তুফা মামুনুর রায়হান অসীম, সদস্য কাজী আজাদ জাহান শামীম প্রমুখ।

এ ব্যাপারে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, টেবিল ঘড়ি প্রতীকে সাধারণ মানুষের জোয়ার উঠেছে। অন্যদিকে তাদের জনসমর্থন না থাকায় নিজেরা বিভ্রান্ত সৃষ্টি করে মানুষের সমবেদনা নেওয়া ও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা শুরু থেকেই বিভিন্ন প্রকার অপপ্রচার, গুজব ও পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়ে বেড়াচ্ছে। কেউ যদি ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করে নিশ্চই সম্মানিত নাগরিকরা বিচার বিশ্লেষণ করে তাদের সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা বারবার বলেছি অপরাধী যেই হোক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করবে।

ঘটনার ব্যাপারে কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, খবর পাওয়ার পর পর আমরা বাঁশবাড়ি কলোনীতে যাই। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে প্রচারণায় যাওয়ার পর দুই পক্ষের সমর্থকদের স্লোগান দেওয়া নিয়ে একটু উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।

ময়মনসিংহ সিটিতে ভোটার ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৩২ পুরুষ, ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৫৫ নারী ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৯ জন। তারা আগামী ৯ মার্চ ইভিএমে ১২৮ কেন্দ্রে ভোট দেবেন। মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থী ছাড়াও নগরের ৩৩টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রার্থী ১৪৯ এবং ১১টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থী আছেন ৬৯ জন। নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ফরহাদ আলম বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ায় কাউন্সিলর পদে ৩২ ওয়ার্ডে শুধু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর