শুরু হয়েছে যক্ষ্মার প্রতিষেধক চিকিৎসা

বিবিধ, নির্বাচন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-10 04:15:57

ল্যাটেন্ট টিউবারকিউলোসিস ইনফেকসন হচ্ছে এমন একটি অবস্থা যেখানে মাইকোব্যকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিসে আক্রান্ত ব্যক্তি তাৎক্ষণিকভাবে তার রোগাক্রান্ত হওয়ার কথা জানতে পারেন না। তবে দীর্ঘ সময় পরে তিনি যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন। তার শরীরে মাইকোব্যকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস সুপ্ত অবস্থায় থাকে।

এই কারণে ঝুঁকিতে থাকতে পারে এমন ব্যক্তি, বিশেষ করে শিশুদের প্রতিষেধক চিকিৎসার আওতায় আনা হচ্ছে।

সোমবার ( ১০ডিসেম্বর ) সকালে রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত ‘সক্রিয় ভূমিকার মাধ্যমে যক্ষ্মা রোগ সনাক্তকরণ ও রোগ প্রতিরোধ নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক গোলটেবিল কর্মশালায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম ও ব্র্যাক যৌথভাবে এই গোলটেবিল কর্মশালার আয়োজন করে।

প্রধান অতিথি হিসেবে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. সামিউল ইসলাম বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে ঝুঁকিতে থাকা সাড়ে ৩ লাখ মানুষকে প্রতিষেধক চিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত যক্ষ্মার কোন প্রতিষেধক ভ্যাক্সিন তৈরি হলে ভাল হতো। কিন্তু ভ্যাক্সিন না থাকাতে প্রচলিত ওষুধেই আমরা প্রতিষেধক চিকিৎসা করছি।

লাইন ডিরেক্টর বলেন, এখন যারা যক্ষ্মায় আক্রান্ত, তাদের আশপাশের মানুষকে বিশেষ করে শিশুদের এই প্রতিষেধক চিকিৎসা দেয়া হবে। এছাড়াও যেখানে মানুষের ঘনত্ব বেশি সেসব স্থানে এই চিকিৎসা প্রদান করা হবে।

তিনি আমাদের এখন মূল লক্ষ্য যক্ষ্মা রোগের সনাক্তকরণ বাড়ানো। এর পাশাপাশি এ রোগ নিয়ন্ত্রণে আমরা এই রোগ সনাক্তকরণের জন্য আধুনিক পদ্ধতির দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। এটা বাস্তব সত্য যে যক্ষ্মা বিষয়ক কর্মকাণ্ডে আর্থিক সহায়তা কমে গেলে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব আসতে পারে। তবে যেহেতু বাংলাদেশ এখনও এই রোগে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ, তাই এটা নিয়ন্ত্রণে সরকার বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে। আমি আশা করছি গ্লোবাল ফান্ডসহ সংশ্লিষ্ট দাতা সংস্থাগুলো এ সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন করতে হলে ২০৩০ সাল নাগাদ যক্ষারোগে মৃত্যুর হার ৯০ শতাংশ এবং নতুনভাবে সনাক্তকৃত যক্ষ্মা রোগীর হার ৮০ শতাংশ কমিয়ে আনতে হবে। আর তা করতে হলে যক্ষ্মা রোগ সনাক্তকরণ ও রোগ প্রতিরোধকে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি যক্ষ্মা রোগ নির্মূলে রাজনৈতিক অঙ্গীকারের বিষয়টি নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির গ্লোবাল ফান্ড ও এমডিআর-টিবির উপদেষ্টা ডা. মো. আব্দুল হামিদ সেলিম। বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিব-এর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশের কমিউনিকেবল ডিজিজেস সার্ভাইল্যান্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মিয়া সেপাল, ব্র্যাকের কমিউনিকেবল ডিজিজ অ্যান্ড ওয়াশ কর্মসূচির পরিচালক ড. মো. আকরামুল ইসলাম, ডেমিয়েন ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. অংকাই জাই মগ, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফ, স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক-এর কমিউনিকেবল ডিজিজ প্রোগ্রাম-এর সহযোগী পরিচালক ডা. মাহফুজা রিফাত প্রমুখ।

কর্মশালায় বক্তারা বেশ কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন। এগুলো হচ্ছে: যক্ষ্মা রোগপ্রতিরোধে আরও মনোযোগী হওয়া, ওষুধের মানের দিকে গুরুত্ব দেওয়া, নগর যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ, শিশু যক্ষ্মা সনাক্তকরণে অধিক গুরুত্ব দেওয়া, বাজারে নতুন ওষুধ আনার ব্যবস্থা করা, যক্ষ্মা বিষয়ক সচেতনতার অংশ হিসেবে গণমাধ্যমে অনুসন্ধানী রিপোর্ট করা ইত্যাদি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর