বিএনপিতে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ বঞ্চিতদের

বিবিধ, নির্বাচন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪ | 2023-08-24 23:51:47

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিছু আসনে টাকার বিনিময়ে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে মনোনয়ন বঞ্চিতরা অভিযোগ করেছেন। ত্যাগী নেতাদের যথাযথ ভাবে দল মূল্যায়ন না করার পাশাপাশি, কিছু আসনে মনোনয়ন কোটি টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়েছে বলে তারা দাবি করেছেন।

শনিবার বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীরা তীব্র প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভ করেছেন।

এদিন বিকেল ৫ টার দিকে মনোনয়ন বঞ্চিতদের সমর্থকরা শ্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে কার্যালয়ের দেয়াল টপকে অনেকে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। দেয়ালের বাহির থেকে কার্যালয় লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে মারেন অনেকেই৷

ইটপাটকেলের আঘাতে কার্যালয়ের সামনের অংশের গ্লাসও ভেঙ্গে যায়। এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের সিনিয়র নেতারা কার্যালয়ের ভেতরেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতাদের সমর্থকরা অভিযোগ করেছেন, 'মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে বাণিজ্য হয়েছে। এমনও কিছু নেতাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে যাদের সঙ্গে এলাকার স্থানীয় নেতা-কর্মীদের কোনো যোগাযোগ ছিল না। বিদেশে ছিলেন, হুট করে এসে মনোনয়ন পেয়েছেন। অথচ দলের কারণে এলাকায় যিনি মামলা, হামলা ও কারাভোগ করেছেন, স্থানীয়ভাবে দীর্ঘদিন এলাকায় জনপ্রিয় তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি'।

সবচেয়ে বেশি বিক্ষোভ করেছেন চাঁদপুর-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী,  বিএনপি'র সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলনের সমর্থকরা।

তাদের মধ্যে চাঁদপুর ১ আসনের কচুয়ার ৫ নং সহেদেব পুর ইউনিয়নের যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রিদয় হোসেন অভিযোগ করে বলেন, 'আমাদের আসন থেকে মোশারফ হোসেনকে (বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মালয়েশিয়া বিএনপির সভাপতি মোশারফ হোসেন)। মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। উনি মালয়েশিয়া থাকেন। কয়েক মাস আগে দেশে এসেছেন। মোশারফ কোটি টাকা দিয়ে মনোনয়ন কিনেছেন। এলাকায় তাকে কেউ চেনেই না। ২০ জন লোকও তার পক্ষে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এ আসন উদ্ধার করতে মিলন ভাইয়ের কোনো বিকল্প নাই। তাকে মনোনয়ন না দিলে আমরা কেউ মাঠে থাকব না'।

কুমিল্লা-৪ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ইঞ্জিনিয়ার মুঞ্জুরুল আহসান মঞ্জুর সমর্থক জেলা যুব দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সামিউল আহসান সামিম বলেন, 'গতকাল আমাদের নেতার মনোনয়ন দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু আজকে তা বাতিল করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে আবদুল মালেক রতনকে। যে কিনা আওয়ামী লীগের চর হিসেবে কাজ করেন। আমাদের নেতা ৪ বার সংসদ সদস্য হয়েছেন। ২৪ মাস জেল খেটেছেন। অথচ তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ করে বলেন, নয়া পল্টন অফিসে গিয়ে ৩ কোটি টাকা দিয়ে আবদুল মালেক রতন মনোনয়ন নিয়েছেন'।

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে আরও ছিলেন, গোপালগঞ্জ-১ আসনের সেলিমুজ্জামান সেলিম, মানিকগঞ্জ-১ আসনের খন্দকার দেলোয়ার হোসেন এর ছেলে খন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলু, কুমিল্লা-৪ আসনের ইঞ্জিনিয়ার মুঞ্জুরুল আহসান মঞ্জুর, মুন্সিগঞ্জ-১ আসনের শেখ মো: আব্দুল্লাহসহ আরও বেশ কয়েক আসনের মনোনয়ন বঞ্চিদের সমর্থকরা।

এদিকে বিক্ষোভ কারীদের মধ্যে তেজগাঁও কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, হাতে গোনা ৮-১০ টি আসনে ঠিক ভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি বলে আজকে এই বিক্ষোভ। তাদের যদি ঠিক মত মনোনয়ন দেওয়া হত তাহলে এরকম বিক্ষোভ হতো না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর