শুনানির অপেক্ষায় খালেদার প্রার্থিতার আপিল

বিবিধ, নির্বাচন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 04:20:42

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৬ (সদর), বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) ও ফেনী-১ আসনে বিএনপি দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি আজ।

শনিবার (০৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি শুরু হয়েছে। আজ ৩১০ নম্বর আপিল থেকে শুনানি শুরু হয়। খালেদার আপিলের শুনানি এই তালিকায় ৩৮৬ নম্বরে ফেনী-১, ৪৪১ নম্বরে বগুড়া-৬ ও ৪৭৯ নম্বরে বগুড়া-৭ আসনের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

আপিলের শুনানিতে উপস্থিত রয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা, কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো: রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ও ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।

এর আগে গত বুধবার (০৫ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনে খালেদার পক্ষে আপিল করেন তার আইনজীবীরা। ফেনী ১ আসনে কায়সার কামাল, বগুড়া- ৬ আসনে নওশাদ জমির ও বগুড়া ৭ আসনে মাসুদ আহমেদ তালুকদার এসব আবেদন জমা দেন।

গত ২ ডিসেম্বর বাছাইয়ে দুই বছরের বেশি দণ্ড থাকায় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাতিল করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ফেনীর রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান ফেনী-১ আসনে এবং বগুড়ার রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়েজ আহম্মদ বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসনে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন। দুর্নীতি মামলায় দুই বছরের বেশি সাজা হওয়ার বিষয়টিকেই মনোনয়নপত্র বাতিলের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

ফেনী-১ আসনে খালেদা জিয়ার পাশাপাশি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মজনু বিএনপির বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। বিএনপির ছাগলনাইয়া উপজেলা সভাপতি নূর আহমেদ মজুমদারও এ আসনে ধানের শীষে ভোট করার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু দলীয় প্রত্যয়নপত্র না থাকায় তা বাতিল হয়ে গেছে। পরে প্রার্থিতা ফিরে পেতে কমিশনে আপিল করলেও তা বাতিল হয়ে যায়। ফেনী-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাসদের শিরীন আখতার এবারও ক্ষমতাসীন জোটের পক্ষে প্রার্থী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়বেন তিনি। রিটার্নিং কর্মকর্তার যাচাইয়ে তার মনোনয়নপত্রও বৈধতা পেয়েছে।

রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, ২৯ নভেম্বর মনোনয়ন জমার শেষ সময় পর্যন্ত মোট ১৪ জন এ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে বৈধতা পেয়েছে দশজনের মনোনয়নপত্র। খালেদা জিয়া, নূর আহমেদ মজুমদার ছাড়াও দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান ও আবুল বাশার চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। বৈধতা পেয়েছে জাসদের শিরীন আখতার, বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, ইসলামী আন্দোলনের কাজী গোলাম কিবরিয়া, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফের শাহরিয়ার ইকবাল, গণফোরামের এবিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, খেলাফত আন্দোলনের আনোয়ার উল্লাহ ভুঁইয়া, স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) শেখ আবদুল্লাহ ও খায়রুল বাশার মজুমদার, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের তারেকুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের কাজী নুরুল আলমের মনোনয়নপত্র।

বগুড়া-৬ (সদর) আসনে খালেদা জিয়ার পাশাপাশি বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। খালেদার মনোনয়ন বাতিল হয়ে গেলেও ফখরুলের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়েজ আহম্মদ জানিয়েছেন, এ আসনে জমা পড়া ১১টি মনোনয়নপত্রের মধ্যে তিনটি বাতিল হয়ে গেছে। ফলে বৈধ প্রার্থী থাকছেন আটজন।

এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য বিরোধী দলের চিফ হুইপ নুরুল ইসলাম ওমরের মনোনয়নপত্র বৈধতা পাওয়ায় জাতীয় পার্টির এই নেতা এবারও মহাজোটের প্রতিনিধিত্ব করবেন। খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা বগুড়ার পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবুর রহমানও এ আসনে ধানের শীষের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়র পদ না ছেড়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় তা বাতিল করা হয়। পরে কমিশনে আপিল করলেও তা গৃহীত হয়নি।

অন্যদিকে বগুড়ার গাবতলী-শাজাহানপুর আসনে খালেদা জিয়ার পাশাপাশি তার বিকল্প প্রার্থী গাবতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মোরশেদ মিল্টনের মনোনয়নপত্রও বাতিল করে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়েজ আহম্মদ জানান, মিল্টন উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও তা গৃহীত না হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তবে মিল্টন এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন। 

এদিকে খালেদা ও মিল্টনের মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় বগুড়া-৭ আসনে ধানের শীষে প্রার্থী শূন্যতা দেখা দেয়। পরে কমিশনে আপিল করলে প্রার্থিতা ফিরে পান মোরশেদ মিল্টন।

আর জেলা বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও শাহজাহানপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরকার বাদল দলীয় মনোনয়ন না পেলেও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু দলীয় প্রত্যয়ন না থাকায় রিটার্নিং কর্মকর্তা তা বাতিল করে দেন। বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট আলতাফ আলী এবারও এ আসনে মহাজোটের প্রার্থী। আওয়ামী লীগের মোস্তফা আলম নান্নু মনোনয়নপত্র জমা দিলেও দলীয় প্রত্যয়ন না থাকায় তা বাতিল হয়ে গেছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এ আসনে জমা পড়েছিল ১৪টি মনোনয়নপত্র, তার মধ্যে সাতটি বাতিল হয়ে যাওয়ায় বৈধ প্রার্থী থাকছেন সাতজন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর