লক্ষাধিক মামলার বোঝা নিয়ে নির্বাচনের মাঠে বিএনপি 

বিবিধ, নির্বাচন

শাহরিয়ার হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 08:21:22

ঐক্যফ্রন্ট এবং শরিক দল নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি। শুরু হয়েছে দ্বিতীয় দিনের মত মনোনয়ন বিক্রি। দলীয় চেয়ারপারসন থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা জড়িয়ে আছে লক্ষাধিক মামলার বেড়া জালে। প্রশ্ন উঠছে এই সব মামলার বোঝা নিয়ে নির্বাচনে কতটা সক্রিয় থাকতে পারবে নেতা কর্মীরা। বিএনপি থেকে এগুলো রাজনৈতিক মামলা বলা হলেও পুলিশ বলছে,  সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের করা হয়েছে এই মামলা গুলো।

তথ্য বলছে, গত ১০ বছরে প্রায় ২৬ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ৯৫ হাজারেরও বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশি কাজে বাধা, নাশকতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে। নির্বাচনী মাঠে বিএনপির পক্ষে যারা লড়বে, মামলার বোঝা আর গ্রেফতার এড়িয়ে কতটুকু সক্রিয়তা দেখাতে পারবে তারা।

তবে সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া আর গ্রেফতার হবে না কেউ। কিন্তু রাজশাহীর সমাবেশে পরে, বিএনপি ও তার জোটের হয়েছে ভিন্ন অভিজ্ঞতা। তারা অভিযোগ করছে যে, সমাবেশের শুরু থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত তাদের তিনশ কর্মী গ্রেফতার হয়েছে। সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা রাখেনি। তাই গণ গ্রেফতারের ভয়ে নির্বাচনের মাঠে প্রচারণা থেকে শুরু করে, সক্রিয় ভুমিকা পালন করতে পারছে না বিএনপি।

বিএনপি অবশ্য বরাবরের মতই এসব মামলাকে ‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক’ হিসেবে আখ্যায়িত করছে। তারা বলছে গত সেপ্টেম্বর মাসেই ৪ হাজার ৯৪টি মামলায় তিন লাখ ৫৭ হাজার ২১০ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

এরমধ্যে এজাহারে নাম উল্লেখ করা হয়েছে ৮ হাজার ৪৮০ জনের। বাকিরা অজ্ঞাতনামা। এই অজ্ঞাতনামা আসামিগুলো পূরণ করতে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরকার গ্রেফতার অভিযান চালাচ্ছে।

বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তথ্যমতে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৩৬টি মামলা হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে আছেও ৩৬টি মামলা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে ১০৬টি, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ছয়টি, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে ১১টি, মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে ৮৪টি, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে ৬৭টি। এ গুলো ছাড়াও বিএনপি নেতাকর্মীদের ৭২ জনের গুমের ঘটনা আছে।

বিএনপি’র নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারের অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরে সহকারী মহাপরিদর্শক সোহেল রানা বার্তা২৪.কমকে বলেন, পুলিশ সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া কাউকে আটক করে না। সাধারণত সভা সমাবেশে বিশৃঙ্খলা, পুলিশের কাজে বাধা দিয়েছে। এমন মানুষদেরকেই গ্রেফতার বা আটক করা হয়েছে। অনেকে আবার বিভিন্ন সময় নানা ধরনের সহিংস আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিল। কোন  নির্দিষ্ট দল বলে না, দেশ বা দেশের শৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

রাজনৈতিক ভাবে কোন দলের সমর্থকে উপর মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার, ভয়ভীতি দেখানো পুলিশের কাজ না। যে কোন দল আইনের মধ্যে থেকে তাদের নির্বাচন কর্মসূচী পালন করতে পারবে।

অন্যদিকে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বার্তা২৪.কমকে বলেন, সরকার গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে আমাদের নির্বাচনী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করার চেষ্টা করছে। যার ফলে সাময়িক ভাবে আমাদের সমস্যা দেখা দিলেও। আমাদের কর্মসূচি বন্ধ করতে পারবে না। কতজনকে গ্রেফতার করবে, ১৭ কোটি মানুষকে তো আর গ্রেফতার করতে পারবে না। বিএনপি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল সুষ্ঠু নির্বাচন দিলে আমরাই জয়ী হব। কোন মামলা হামলা আর গ্রেফতারে আমরা ভয় পাইনা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর