সিলেট-৪: বিএনপি’র একাধিক প্রার্থী, আ’লীগে ভাগ বসাতে চায় জাপা

বিবিধ, নির্বাচন

নূর আহমদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 21:52:51

জাফলং, বিছনাকান্দি, পান্তুমাই, লালাখাল, শ্রীপুর ও ভোলাগঞ্জসহ সিলেট বিভাগের বেশীরভাগ পর্যটন কেন্দ্রের অবস্থান সিলেট-৪ (কোম্পানীগঞ্জ-গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর) আসনে। আয়তনের দিক থেকে তিনটি উপজেলা নিয়ে গঠিত বাংলাদেশের অন্যতম বড় নির্বাচনী এলাকা এটি।

সরকারের বিপুল রাজস্ব আয়ের উৎস পাথর কোয়ারির জন্য অতি পরিচিত সিলেট-৪ আসনের দিকে বিশেষ নজর থাকে সকলের। সেই আসনটিতে এবার বিএনপি’র প্রার্থী একাধিক, আওয়ামী লীগের প্রার্থী দুই জন আবার জাতীয় পার্টিও ভাগ বসাতে চাই আসনটিতে।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ডাক, টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদ সিলেট-৪ আসনের বর্তমান সাংসদ। তিনি এ আসনের ছয়বারের সাংসদ। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি’র কোনো প্রার্থী ছিল না। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদ।

ভোলাগঞ্জ, জাফলং, বিছনাকান্দি, শাহ আরপিন, উৎমাছড়া ও শ্রীপুর পাথর কোয়ারির অবস্থান এই সংসদীয় আসনে। এসব কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন ও টোল (রয়েলটি) আদায় নিয়ে স্থানীয় এমপিকে বরাবরই থাকতে হয় বেকায়দায়। সবকটি কোয়ারীতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নিজ দলের নেতাকর্মীরা বিভক্ত।

অনেকেই চোখের সামনে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হলেও ক্ষমতাসীন সাংসদ ইমরান আহমদ ছিলেন উদাসীন। তবে সরকারের শেষ মুহূর্তে এসে কোয়ারীতে গড়ে উঠা নিজ দলের সিন্ডিকেটের লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করেছেন তিনি। বিএনপি নির্বাচনে এলে এ আসনে তাঁর পক্ষে বিজয়ী হওয়া অনেকটা চ্যালেঞ্জিং হবে ধারণা ভোটারদের। গত নির্বাচনে স্বতন্ত প্রার্থী হওয়া ফারুক আহমদও আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী। 

বিএনপি’র প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিম। তিনি এক সময় গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। পাশাপাশি সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এলাকার মানুষের সাথে তাঁর ভালো যোগাযোগ রয়েছে।

বিএনপি’র অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী হলেন গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের পর পর দুই বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি আব্দুল হেকিম চৌধুরী।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এড. কামরুজ্জামান সেলিম ও সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও দলের কেন্দ্রীয় সহ-স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক এড. শামসুজ্জামান জামানও এ আসনে বিএনপি’র প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

দীর্ঘ দিন থেকে মাঠে কাজ করছেন সিলেট জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য তাজ রহমান। এ আসনে দলের প্রার্থী হতে চান। এ লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন।

সিলেট-৪ আসনটিতে ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাবিবুর রহমান নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে নির্বাচিত হন বিএনপি প্রার্থী নাজিম কামরান চৌধুরী। ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইমরান আহমদ নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে পুনরায় ইমরান আহমদ নির্বাচিত হন। ৯৬ সালে বিএনপির প্রার্থী প্রয়াত অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমান এ আসন থেকে নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী দিলদার হোসেন সেলিম নির্বাচিত হন। ২০০৮ সাল ও ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইমরান আহমদ নির্বাচিন হন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, এ আসনের মোট ভোটার তিন লাখ ৫৮ হাজার ৪৭৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৮৪ হাজার ৬২ জন ও নারী ভোটার রয়েছেন এক লাখ ৭৪ হাজার ৪১৭ জন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর