মেয়রপুত্র ও ভাতিজিকে পরীক্ষাকেন্দ্রে ‘অতিরিক্ত সময়’: বিতর্কে সচিবকে অব্যাহতি

, শিক্ষা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, নেত্রকোণা | 2024-02-25 21:25:42

নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় এসএসসি’র পরীক্ষাকেন্দ্রে স্থানীয় মেয়রপুত্র ও তাঁর ভাতিজিকে ‘অতিরিক্ত সময়’ দেওয়া নিয়ে চরম বিতর্কের জেরে ওই কেন্দ্র সচিবকে অব্যাহতি প্রদানের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) জেলার কেন্দুয়ার পৌর এলাকার সায়মা শাহজাহান একাডেমি কেন্দ্রে এই ঘটনা ঘটে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এদিন এসএসসি গণিত পরীক্ষার দিন নির্ধারিত ছিল। কিন্তু কেন্দ্রের সবগুলো কক্ষের পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন হলেও একটি কক্ষে পরীক্ষার জন্য  নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাবার পরও অতিরিক্ত বিশ মিনিট হলে লেখার সুযোগ পায় পরীক্ষার্থীরা। এতে সেখানে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ায়ার সৃষ্টি হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, কেন্দুয়া পৌরসভার মেয়র ও ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি আসাদুল হক ভুঁইয়ার ছেলে ও ভাতিজি সেই কক্ষের পরীক্ষার্থী হওয়ার বদৌলতেই আসলে ওই অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়, যা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও নীতিমালা পরিপন্থী।
 
এনিয়ে সংক্ষুব্ধ স্থানীয় চিরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর অভিভাবক এনামুল কবীর খান কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এই বিষয়ে অভিযোগ জানান। অভিযোগসূত্রে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দুয়া পৌর এলাকার সায়মা শাহ্জাহান একাডেমি কেন্দ্র হলে রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) চলছিল এসএসসির গণিত বিষয়ে পরীক্ষা। এখানে ১১ টি হলের মধ্যে ১০টি হলের পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়। কিন্তু কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, পৌরসভার মেয়র আসাদুল হক ভূঁইয়ার ছেলে ও ভাতিজি যে হলে ছিল সেখানে পরীক্ষা শেষ হয় নির্ধারিত সময়ের চেয়েও বিশ মিনিট পর। অভিযোগ উঠে ওই হলের শিক্ষার্থীদের অনৈতিক সুবিধা দিতেই তাদের অতিরিক্ত সময় হয়। এতে অভিভাবক ও স্থানীয়দের একাংশ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অভিযোগ জানানো হয়।

যদিও এবিষয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিবের দায়িত্ব পালন করা মজলিশপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতনচন্দ্র দেবনাথ অভিযোগের বিষয়ে বলেন, ‘খাতা তুলতে দেরি হয়েছে। তবে কাউকে অতিরিক্ত সময় দিয়ে কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি।’-কিন্তু ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের সকল কক্ষের খাতা সংগ্রহ হয়ে গেলেও কেন একটি হলের খাতা ২০ মিনিট পর কেন নেওয়া হল, সেই প্রশ্নের কোন সদত্তুর তিনি দিতে পারেননি।

একটি কক্ষের খাতা বিলম্বে আসার সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মির্জা আহমদ এ বিষয়ে বলেন, ‘১২ টি কক্ষে পরীক্ষা হয়। ১ নম্বর কক্ষের খাতা লেটে আসে। সেই সময়টা হয়ত ১৫ মিনিট। পরে সন্দেহের উদ্রেক হলে এগিয়ে যাই এবং খাতা তুলে নিই।’

কেন্দুয়ার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এনামুল হোসেন রোববার রাতে বার্তা২৪.কম-কে জানান, ‘১ নং হলের দায়িত্বরত কেন্দ্রসচিবকে দায়িত্ব থেকে অবহ্যাহতি দিয়ে সকলকেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট হাতে পেলে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর