অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানোর পরামর্শ এফবিসিসিআইয়ের

বাজেট, অর্থনীতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-01 04:48:14

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে বাজেটে দেশীয় শিল্পকে অগ্রাধিকার দিয়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়াতে হবে।

রোববার (৭ জুন) ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও খাত সংশ্লিষ্টরা।

কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক টেকসই, পুনরুদ্ধার, অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ, এফডিআই এবং ওএফডিআই বিষয়ে ওয়েবিনার করে এফবিসিসিআই। সংগঠনটির সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, সফিকুল ইসলাম মহিউদ্দিন, আবদুল মাতলুব আহমাদ প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন।

করোনার প্রাদুর্ভাবে আর্থিক ক্ষতি মোকাবিলায় ব্যাংক ঋণ ভিত্তিক যেসব প্যাকেজ গ্রহণ করা হয়েছে তা সঠিকভাবে বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকিং খাত সংকটের মধ্যে দিয়ে চলছে। তার ওপর সরকার ব্যাংক ঋণ ভিত্তিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এতে করে অর্থনীতির উন্নতি হবে। তবে প্রণোদনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবশ্যই সহযোগিতা করতে হবে। ইতিমধ্যে আমরা দেখেছি বাংলাদেশ ব্যাংক অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যার মাধ্যমে ব্যাংক খাতে তারল্য বাড়বে। এই উদ্যোগটি স্বল্পমেয়াদি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তিনি। তিনি বলেন, প্রয়োজনে ৫, ১০ অথবা ১৫ বছর মেয়াদি প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি এতটা কমে যাওয়া আসলেই দুঃখজনক। তবে করোনা পরবর্তীতে কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য বেসরকারি ঋণ বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানান তিনি।

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি একে আজাদ বলেন, আর্থিক ক্ষতি মোকাবিলায় বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। পাশাপাশি দেশীয় দক্ষশক্তি বাড়াতে হবে। কারণ দক্ষ জনশক্তি না থাকায় দেশ থেকে প্রতি বছর ৫ বিলিয়ন অর্থ চলে যাচ্ছে। এটি বন্ধ করতে হবে।

আব্দুল মাতলুব আহমেদ বলেন, এখন সময় দেশীয় ইন্ডাস্ট্রিকে সাপোর্ট দেওয়া। পণ্য উৎপাদন করে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ানো; বিদেশেও রফতানি করা যাবে। বাংলাদেশকে পুরো ইপিজেডের মতো করে দেবেন। দেশটাই পাল্টে যাবে। চলমান পরিস্থিতিতে যেসব পণ্য রফতানি করতে সমস্যা হচ্ছে তা দেশের বাজারে সরবরাহের পরামর্শ দেন তিনি।

সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, দেশের কৃষকরা চলমান সংকটকালীন সময়ে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছে। তাই কৃষি খাতের ঋণ প্যাকেজের সুদহার আরও কমিয়ে আনার দাবি জানান তিনি।

এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি এবং বিজিএমইএ-এর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, করোনা সংকট মোকাবিলায় কর্মসংস্থান তৈরির কোনো বিকল্প নেই। কারণ ইতিমধ্যেই ১৪ লাখ কর্মী বিদেশ থেকে ফিরে এসেছেন। তাদের পাশাপাশি দেশের জনগণের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়াও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে সক্রিয় পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

এনবিআর সদস্য মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের করোনা সংকট মোকাবিলা করতে হবে। সরকার যেই স্টিমুলাস প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তার পাশাপাশি ট্যাক্স হার কমিয়ে আনার প্রয়োজন আছে। গত ২৫ বছরে আমরা লক্ষ্য করেছি ট্যাক্স রেট কমালে রেভিনিউ কখনোই কমে না। আগামী দুই বছরে অবশ্যই এই সুযোগ তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি ভ্যাট কমানোরও প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়াও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা খাতকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। যা আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী ভিতের ওপর দাঁড়াতে সাহায্য করবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর