মুনাফার ধারা অব্যাহত রেখেছে গাজী ওয়্যারস

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 13:32:45

দেশে বিশ্বমানের সুপার এনামেল তামার তার তৈরি করে মুনাফার ধারা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশন (বিএসইসি) এর শিল্প প্রতিষ্ঠান গাজী ওয়্যারস লিমিটেড।

জাপানের উন্নতমানের ইলেকট্রোলাইটিক তামার তার এবং হিটাচির ইনসুলেটিং ভার্নিস ব্যবহার করে ৯৯ দশমিক ৯৯ ভাগ সুপার এনামেল তামার তার উৎপাদন করছে এ কারখানা। ফলে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী আন্তর্জাতিকমানের তামার তার সরবরাহ করে লাভের ধারা অক্ষুণ্ণ রেখেছে গাজী ওয়্যারস।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশন (বিএসইসি)- এর সূত্রে জানা যায়, গাজী ওয়্যারস লিমিটেড ২০১৪-১৫ অর্থ বছর থেকে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে যথাক্রমে ১৭.৪৭, ১৭.৮২, ১৯.৫৫, ১৬.৪৭, ২১.১৩ ও ৯.২৭ কোটি টাকার রাজস্ব প্রদান এবং ১১.৯৮, ১৫.৮৮, ১৬.৪৩, ৮.৮৩, ৮.২৬ ও ১.২৫ কোটি টাকা লাভ করেছে।

গাজী ওয়্যারসের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মো. গোলাম কবির বলেন, এই কারখানার উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে গাজী ওয়্যারস লিমিটেডের নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ৮.৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ইতালি হতে ২৫০ মে. টন উৎপাদন ক্ষমতাসম্পূর্ণ একটি ভার্টিক্যাল এনামেলিং মেশিন ক্রয় করে স্থাপন করা হয় এবং ২০১৯ সাল থেকে নতুন মেশিনটির মাধ্যমে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়।

গাজী ওয়ারস প্রায় ৫৫ বছরের পুরাতন জাপানি যন্ত্রপাতির মাধ্যমে প্রতি অর্থবছর ৪০০ থেকে ৪৫০ মে. টন তামার তার উৎপাদন করতো। তবে নতুন এই মেশিনটি যুক্ত হওয়ায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৭০০ মে. টন অতিক্রম করেছে বলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান। এতে ৫০ শতাংশ বৈদ্যুতিক শক্তিসহ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কাঁচামাল ও শ্রমিকের কর্মঘণ্টার সাশ্রয় এবং পুরাতন পদ্ধতির তিনগুণ পর্যন্ত তামার তার উৎপাদন করা সম্ভব।

কারখানাটি একটি সরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠান হওয়ায় ও উন্নত মানের কাঁচামাল হতে বৈদ্যুতিক তার প্রস্তুত করায় বাজারে একই পণ্য উৎপাদনকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে গাজী ওয়্যারসকে অসম প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, গাজী ওয়্যারস লিমিটেডের আধুনিকায়নের লক্ষ্যে অক্টোবর ২০১৮ হতে ‘গাজী ওয়্যারস লিঃ কে শক্তিশালী ও আধুনিকীকরণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কারখানাটিকে শক্তিশালী করে এটির উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করার লক্ষে সরকারি অর্থায়নে ৬৮ কোটি ৯৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, যা ডিসেম্বর ২০২১ সাল নাগাদ সমাপ্ত হবে।

প্রকল্পের মাধ্যমে গাজী ওয়্যারসের ৫০ বছরের বেশি পুরাতন যন্ত্রপাতি পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন যন্ত্রপাতি ও ডিজেল জেনারেটর স্থাপন করা হবে। ফলে কারখানার উৎপাদন ব্যয় হ্রাস, পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি ও অপচয় কমিয়ে এনে অধিকতর লাভজনক করা সম্ভব হবে।

বিএসইসি'র সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) গাজী ওয়্যারসের লিমিটেডের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। এ ছাড়া পিডিবি, ডিপিডিসি, ডেসকো, পিজিসিবি, বরেন্দ্র উন্নয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এ কারখানায় উৎপাদিত বৈদ্যুতিক তার ক্রয় করে থাকে। গাজী ওয়্যারসের তামার তার প্রধানত বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও মোটরসহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিক ইকুপমেন্ট তৈরি ও মেরামতের কাজে ব্যবহার করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর