চীন-মার্কিন বানিজ্য যুদ্ধে বিশ্ববাজারে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা

, অর্থনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 11:35:16

ঢাকা: চীন থেকে আমদানি পণ্যের উপর ৩৪ বিলিয়ন ডলারের শুল্ক আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। চীন সরকার এর প্রতিক্রিয়া পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছে। ফলে বিশ্ববাজার পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল হবার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন, গবেষক ও বিশ্লষকরা। তবে পাশাপাশি এ যুদ্ধে উত্থান হতে পারে নতুন কোন বাণিজ্যিক শক্তির। সুফল ভোগ করতে পারে এশিয়ার অন্য দেশগুলো বলেও অভিমত দেন তারা।

চীন সরকারের দাবি যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লউটিও) নিয়ম লংঘন করেছে। এর ফলে বিশ্ব বাজারে বিশৃঙ্খলা দেখা দিবে। এর ফলে বিভিন্ন পর্যায়ের উদ্যোক্তা ও ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বার্তা২৪.কমকে বলেন, সরাসরি বললে, এর ফলে বাংলাদেশ থেকে যেসব পণ্য রপ্তানি হয় তার উপর প্রভাব পড়বে কিনা তা দেখার বিষয় রয়েছে। শুধু চীন নয়, ভারত এবং ইউরোপের যেসব পণ্যের উপর মার্কিন শুল্ক আরোপ হয়েছে, তা মূলত রপ্তানি পণ্যের উপর। এর ফলে মার্কিন বাজারে রপ্তানির ক্ষেত্রে একটি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলো।

তিনি বলেন, উপমহাদেশের মধ্যে দুই দিক থেকে (যুক্তরাষ্ট্র ও চীন) ভারত ভাল সুবিধা পেতে পারে। যেহেতু মার্কিনিরা চীনের সঙ্গে একটি বাণিজ্যিক যুদ্ধের দিকে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে তারা একি পণ্য অন্য দেশ থেকে কিনবে এবং বিক্রি করবে। এক্ষেত্রে উভয় পক্ষ হয়তো বর্তমান বাজার মূল্যের থেকে বেশি বা কম দামে ক্রয় বিক্রয় করবে। আর এর সুফল পাবে যারা নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করবে।

অথবা, এ শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্র একই পণ্যে হয়তো অন্য কোন রাষ্ট্র থেকে নেবে। চীনও তাদের বিকল্প বাজার খুঁজবে। আমাদের দেখার বিষয় হলো, চীনের যেসব কাঁচামাল যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হতো তা কি পরিমাণ বাংলাদেশের প্রয়োজন হচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আমদানি বাজারে হয়তো একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে এ ধরনের বাণিজ্যিক যুদ্ধে দুই পক্ষের ভোক্তা পর্যায়ে সমস্যা তৈরি হবে। দুই দেশের পণ্য মূল্য বাড়তে থাকবে। স্বাভাবিকভাবে ভোক্তারা পণ্য কম কিনবেন। এর প্রভাব ধারাবাহিকভাবে সব পণ্যের উপর পড়বে। যা পর্যায়ক্রমে আন্তর্জাতিক বাজারে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করতে পারে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানীকারক অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিজিএমইএ) সভাপতি ও এফবিসিসিআয়ের সাবেক প্রথম সহ সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বার্তা২৪.কমকে জানান, চায়না থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি খরচ কম। এছাড়া আমাদের তৈরি পোশাক খাতেও চায়না থেকে শুল্ক বেশি। ফলে পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে বিশেষ কোন সুবিধা পাবার সম্ভাবনা না। মূলত দেখার বিষয় কি ধরনের কাঁচামালের উপর মার্কিন শুল্ক আরোপ হয়েছে এবং সেসব পণ্যে আমাদের উৎপাদন ও রপ্তানি সম্ভাবনা কেমন?

বাণিজ্যিক যুদ্ধের বিষয়ে তিন বলেন, এ যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র টিকতে পারবে কি-না, এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র আমদানি মূল্যে তাদের নিজের দেশে একই পন্য উৎপদান করতে পারবে না। আর এটা করতে গেলে বড় মূল্য দিতে হবে। যা ভোক্তা পর্যায়ে অস্থিরতা তৈরি করবে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সিদ্ধান্ত থেকে দ্রুত সরে আসতে হতে পারে। তা না হলে নিজেরাই চাপে পড়বে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর