বিটিআরসি-গ্রামীণফোন দ্বন্দ্বে লাফিয়ে কমছে শেয়ারের দাম

পুঁজিবাজার, অর্থনীতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-31 15:16:57

গত দু'মাসে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত টেলিযোগাযোগ খাতের কোম্পানি গ্রামীণফোনের শেয়ারের দাম কমেছে প্রায় ৫০ টাকা। বহুজাতিক এই কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় সমগ্র বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কারণ কোম্পানিটি দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) উত্থান-পতনের পেছনে ১১ দশমিক ১৬ শতাংশ অবদান রাখে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কমার মূল কারণ হচ্ছে- বকেয়া পরিশোধ নিয়ে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) সঙ্গে চলমান দ্বন্দ্ব। দিন যতই বাড়ছে দ্বন্দ্ব আরও বেগবান হচ্ছে। দ্বন্দ্ব এমন রূপ নিয়েছে, যে সিটিসেল কোম্পানির মতোই যেকোনো সময় গ্রামীণফোনের লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগ নিচ্ছে বিটিআরসি।

ডিএসই'র তথ্য মতে, গত ২৭ জুন গ্রামীণফোনের শেয়ার লেনদেন হয়েছিল ৩৬৫ দশমিক ১০ টাকায়। সেখান থেকে ৪৮ দশমিক ২১ টাকা কমে ২৮ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩১৬ দশমিক ৮০ টাকায়। কোম্পানিটি প্রতিবছর মুনাফা করছে, বিনিয়োগকারীদেরও ভালো লভ্যাংশ দিচ্ছে। তারপরও গত দুই মাসে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ৪৮ দশমিক ২১ টাকা। কোম্পানিটি বিনিয়োগকারী অর্থাৎ শেয়ারহোল্ডারদের সর্বশেষ বছরের ২৮০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে।

২০০৯ সালে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে রয়েছে ৯০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ শেয়ার। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে মাত্র ২ দশমিক ১৪ শতাংশ শেয়ার।

বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, পাওনা টাকা আদায়ের জন্য ব্যান্ডউইথ সীমিতকরণ ও এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) বন্ধের পর গ্রামীণফোন লাইসেন্স বাতিলের আগে নিয়ম অনুযায়ী কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠাবে বিটিআরসি। এটি তৈরি করতে দুই-একদিন সময় লাগবে।

এরইমধ্যে কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। লাইসেন্স বিধি অনুযায়ী অপারেটরগুলোকে নির্দিষ্ট সময় দিয়ে (৩০ দিন হতে পারে) লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হতে পারে। জবাব পেলে সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর জবাব না পেলে পরবর্তী কমিশন বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করে সমাধানের পথ খোঁজা হবে। তখন লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্তও হতে পারে। আর এ কারণে শেয়ারের দাম কমছে।

উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসে প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা বকেয়া দাবি করে গ্রামীণফোনকে নোটিশ পাঠিয়েছিল বিটিআরসি। টাকা পরিশোধের জন্য অপারেটরটিকে দুই সপ্তাহ সময়ও দেওয়া হয়।

বিটিআরসি থেকে তখন বলা হয়, 'গ্রামীণফোন সর্বশেষ অডিটের পরে এই ডিমান্ড লেটার পাঠানো হয়েছে। কিন্তু দুই সপ্তাহের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করায় বিটিআরসির কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গত ৪ জুলাই অপারেটর দুটির ব্যান্ডউইথ সীমিত করে দেওয়া হয়। এরপর এই আদেশ প্রত্যাহার করে এনওসি দেওয়া বন্ধ করা হয়।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর