কাঁচা চামড়া রফতানিতে লাভবান হবেন পাইকারি ব্যবসায়ী-আড়তদাররা

, অর্থনীতি

শিহাবুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-18 03:55:16

গেল কোরবানির ঈদে পশুর চামড়া নিয়ে জল কম ঘোলা হয়নি। ন্যায্য দাম না পাওয়ায় অনেক জায়গায় চামড়া মাটিতে পুতে ফেলে নীরব প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ ও বিভিন্ন মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে সরকার কাঁচা চামড়া রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে চামড়া রফতানি করে লাভবান হবেন পাইকারি ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা। তবে সরকারের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ট্যানারি মালিকরা।

জানা গেছে, ট্যানারি মালিকদের কাছে বিপুল পরিমাণ টাকা বাকি থাকায় কাঁচা চামড়া রফতানিতে আগ্রহী পাইকারি ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা।

তাদের দাবি, কাঁচা চামড়া রফতানি করা গেলে অন্তত ট্যানারি মালিকদের কাছে বছরের পর বছর টাকা বাকি রাখতে হবে না। আর দেশের মানুষও চামড়ার ন্যায্য মূল্য পাবেন। তবে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন পর্যায়ের শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। কারণ কাঁচা চামড়া রফতানি হলে তাদের আর প্রয়োজন পড়বে না। ফলে তারা বেকার হয়ে যেতে পারেন।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্ক্রিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী মো. দেলোয়ার হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘কাঁচা চামড়া রফতানির সিদ্ধান্তে আমাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। বাইরের অনেক এজেন্সি ইতোমধ্যে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। কিন্তু আমাদের লাইসেন্স নাই। সরকার চাইলে ১০-১২ দিনের মধ্যে লাইসেন্স দিতে পারে। কাঁচা চামড়া রফতানি করা গেলে কোনো ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ট্যানারি মালিকদের অভিযোগ- কাঁচা চামড়া রফতানি হলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কিন্তু আমরা তাদের ক্ষতি করতে চাইনি। শতকরা ৯০ ভাগ ট্যানারি মালিক ব্যবসায়ীদের টাকা বাকি রেখেছেন। ফলে এই পরিবর্তনের দায় তাদের নিতে হবে। কাঁচা চামড়া রফতানি শুরু হলে ট্যানারি মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন সত্য। কিন্তু চামড়া ব্যবসায়ীদের জন্য একটা পথ বের হবে। আমরা আর কতদিন টাকা বাকি রেখে চলব? আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা চাচ্ছি কাঁচা চামড়া রফতানি হোক। চীনে কাঁচা চামড়ার অনেক চাহিদা আছে।’

পাইকারি চামড়া ব্যবসায়ী নিজামুল হক অ্যান্ড সন্সের মালিক মো. নিজামুল হক নজু বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘কাঁচা চামড়া রফতানি করা গেলে আমরা উপকৃত হব। কিন্তু রফতানি করবে কে? সরকার নাকি ব্যবসায়ীরা সেটা এখনো স্পষ্ট নয়। সরকার যদি আমাদের কাছ থেকে চামড়া কিনে রফতানি করে তাহলে আমরা বেশি উপকৃত হব।’

তিনি আরও বলেন, ‘চামড়া রফতানি হলে এই সেক্টরের শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাছাড়া ফিনিশড চামড়া তৈরি করতে অনেকে বিদেশ থেকে মেশিন কিনে এনেছেন। এখন এগুলোর কী হবে? তবে সরকার ফিনিশড চামড়ার সঙ্গে ব্লু (প্রাথমিক প্রক্রিয়াজাত করা) চামড়াও রফতানি করতে পারে।’

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) সভাপতি শাহীন আহমেদ সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, কাঁচা চামড়া রফতানির সুযোগ দিলে শতভাগ দেশীয় এই শিল্প হুমকির মুখে পড়বে। এছাড়া চামড়া শিল্প নগরী সাত হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ ঝুঁকিতে পড়বে। ফলে অনেকে বেকার হয়ে পড়বেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর