দিনে ১১শ’ কোটি টাকার লেনদেন মোবাইল ব্যাংকিংয়ে

ব্যাংক বীমা, অর্থনীতি

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-30 09:58:06

দৈনিক ১১শ’ ২০ কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। যা বিগত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪০ কোটি টাকা বেশি বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস’র লেনদেন হিসাব করে এমন তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই মাসের ২১ কোটি ৪৭ লাখ লেনদেনে টাকার পরিমাণ ছিলো ৩৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। দিন প্রতি গড় লেনদেন হয়েছে ১১শ’ ২০ কোটি টাকা।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ওই মাসে মোট গ্রাহকের সংখ্যা ছিলো ৬ কোটি ৭৩ লাখ। যার মধ্যে ৩ কোটি ৩৪ লাখ সক্রিয় গ্রাহক। এ সময়ে এজেন্টের সংখ্যা ছিলো ৮ লাখ ৯৮ হাজার ৯৯৬ জন। অন্যদিকে জানুয়ারি মাসে ৩৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে দৈনিক গড়ে ৯৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। ই-কর্মাসের পরিমাণ পরিমাণ ছিলো সাড়ে ৪ কোটি টাকা। এই সেবার মাধ্যমে রেমিট্যান্স দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

তবে একই বছরের মার্চে এসে এজেন্ট ও লেনেদেন বাড়লেও কমে গেছে সক্রিয় গ্রাহক। মার্চে এজেন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ১৯ হাজার ১৯১। আর ওই মাসে সক্রিয় গ্রাহক পাওয়া গেছে ৩ কোটি ২৩ লাখ ৫৮ হাজার। যার মাধ্যমে মোট লেনদেন হয়েছে ৩৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এ সময়ে দৈনিক গড়ে ৬৭ লাখ ৪৪ হাজার লেনদেন হয়েছে বলে জানা গেছে।

কোন অ্যাকাউন্ট থেকে টানা তিন মাস লেনদেন না হলে নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্ট হিসেবে বিবেচিত হয়। হিসাব খোলা, পরিচালনা ও লেনদেনে আরও বেশি কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এখন একজন ব্যক্তি একটি সিম দিয়ে যেকোন মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় একটি মাত্র হিসাব চালু রাখতে পারবেন।

একজন গ্রাহক তার মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসে (এমএফএস) সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকার স্থিতি রাখতে পারবেন। এর আগে এই বিধিনিষেধ ছিল না। কোনো হিসাব থেকে ৫ হাজার বা তদুর্ধ্ব নগদ অর্থ জমা বা উত্তোলনে গ্রাহকের পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ডের ফটোকপি প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যা এজেন্ট তার রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করবেন। রেজিস্ট্রারে গ্রাহকের স্বাক্ষর বা টিপসই সংরক্ষণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোন এজেন্ট এই ধরনের কার্যাদি যথাযথভাবে সম্পন্ন না করলে বা গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে এজেন্টশিপ বাতিল করারও নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশে বর্তমানে ১৬টি প্রতিষ্ঠানের মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের অনুমোদন রয়েছে। এক সময় মোবাইল ব্যাংকিংকে খুবই গুরুত্ব দেওয়া হলেও এখন ক্যাশলেস সোসাইটিকে বেশ কার্যকরী মনে করা হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে এই সেবা খুব একটা জনপ্রিয় হচ্ছে না। ধীরে ধীরে উন্নতি করলেও এর হার অনেক কম।

বর্তমানে শহরাঞ্চলে এটিএম সেবার পরিধি বাড়লেও উপজেলা ও গ্রামীণ হাটবাজারে সেভাবে বিস্তৃতি লাভ করেনি। আবার শহরেও গ্রাহকরাও এটিএম দিয়ে টাকা তুলে খরচ করতেই বেশি পছন্দ করছেন। কিন্তু প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চীন ক্যাশলেস সোসাইটিতে অনেক দূর এগিয়ে রয়েছে। তাদের নাগরিকরা গাড়ির ভাড়াও কার্ডের মাধ্যমে পরিশোধে অভ্যস্থ হয়ে উঠছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর