সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে বিমান চলাচল ও পর্যটন খাত

বাজেট, অর্থনীতি

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 09:14:59

ঢাকা: ২০১৯-২০ প্রস্তাবিত বাজেটে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। আর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পরিকল্পনা বিভাগ।

বিদায়ী বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় এবারের বাজেটের আকার ১৮ শতাংশ বেশি বাড়লেও বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ২২০ শতাংশ ও পরিকল্পনা বিভাগের জন্য ১৪০ শতাংশ বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জন্য বিদায়ী বাজেটে বরাদ্দ ছিলো ১ হাজার ৭১ কোটি টাকা। আর প্রস্তাবিত বাজেটে এই বরাদ্দ বাড়িয়ে প্রায় তিনগুণ অর্থাৎ, ৩ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এরপরেই রয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পরিকল্পনাবীদরা। বিদায়ী বছরে পরিকল্পনা বিভাগের জন্য বরাদ্দ ছিলো ৫১৩ কোটি টাকা। এবারে প্রস্তাবিত বাজেটের আকার বাড়িয়ে করা হয়েছে ১ হাজার ২৩১ কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেটের আকারের সঙ্গে সঙ্গতি রাখা হলে এই বিভাগের বরাদ্দ পাওয়ার কথা ছিলো ৬০৫ কোটি টাকা।

তৃতীয় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে  মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়।  জনগনের আমিষ, পুষ্টির অন্যতম যোগানদাতা ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী এই মন্ত্রণালের কপাল খুলেছে বলা যায়।

অতীতে পিছিয়ে থাকা এই মন্ত্রণালয়টির বাজেট বরাদ্দ ৬৪ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদায়ী অর্থ বছরে ১ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও, এবার ২ হাজার ৯৩২ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।

চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে মন্ত্রিপরিষদের বরাদ্দ বৃদ্ধির হার। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জন্য ৫৫ শতাংশ বাজেট বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বিগত বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ ছিলো ১৫৫ কোটি টাকা, প্রস্তাবিত বাজেট বাড়িয়ে ২৪১ কোটি টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে আনন্দদায়ক ভ্রমণের সাথী রেলপথ মন্ত্রণালয়। এই মন্ত্রণালয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৪৫ শতাংশের মতো। বিগত বছরে এই মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ছিলো ১১ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। এবার বরাদ্দ বাড়িয়ে ১৬ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

ষষ্ঠ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বাজেট প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান অর্থ বিভাগ। এই বিভাগে বাজেটের হার বেড়েছে ৩৬ শতাংশ। বিদায়ী বছরে বরাদ্দ ছিলো ৯৫ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা, এবার এই বরাদ্দ বাড়িয়ে ১ লাখ ৩০ হাজার ৮১০ কোটি টাকা করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।

এরপর যথাক্রমে বেশি বরাদ্দ পেয়েছে সেতু বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের নাম।

সেতু বিভাগের বাজেটের আকার বেড়েছে ৩৫ শতাংশ। বিদায়ী বছরে এই বিভাগের ভাগে বরাদ্দ ছিলো ৬ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। এবার বাড়িয়ে ৮ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।

কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের বাজেটের আকার বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। বিদায়ী বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ ছিলো ৫ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থ বছরের বাজেটে ৭ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জন্য বিদায়ী বছরে অনুমোদিত বাজেট ছিলো ২ হাজার ৮০১ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে ১৭ কোটি টাকা বেশি অনুমোদন দেওয়া হয়। এই খাতে ২৫ শতাংশ বাজেটের আকার বাড়িয়ে ৩ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের বাজেটের আকার ২৪ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এই বিভাগে বিদায়ী বাজেটে বরাদ্দ ছিলো ২৩ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে ২৯ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেট বৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়সহ বেশি কিছু মন্ত্রণালয়।

বাড়ন্ত বাজেটের সঙ্গে ছন্দ মেলাতে পারেনি জ্বালানি বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, কৃষি ও পরিবেশসহ অনেকগুলো মন্ত্রণালয়। 

বিদায়ী (২০১৮-১৯) অর্থ বছরে অনুমোদিত বাজেটের আকার ছিলো ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা, যা সংশোধনীতে কমে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা। আর এবার বাজেটে প্রস্তাব করা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।

সংশোধিত বাজেটের আকার ১৮ শতাংশ বাড়লেও, অনুমোদিত বাজেটের তুলনায় আকার বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ। রীতি অনুযায়ি আলোচনা পর্যালোচনা শেষে এই বাজেট অনুমোদন করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর