জনপ্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে একগুচ্ছ চমক দিয়ে প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।
জীবনের প্রথম বাজেটে দীর্ঘদিন স্থবির থাকা দেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে প্রস্তাবিত বাজেটে ১০০টি ইকোনমিক জোনকে করমুক্ত রাখার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বাজেটে।
প্রবাসীদেরকে রেমিট্যান্সে টাকা পাঠাতে উৎসাহিত করতে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ কোনো প্রবাসী এক হাজার টাকা রেমিট্যান্স পাঠালে প্রণোদনা হিসেবে ২০ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বেকার তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ১০০ কোটি টাকার তহবিল রাখা হয়েছে। গ্রামীণ কৃষকদের বাঁচাতে বিশেষ প্রণোদনা রাখা হয়েছে। কৃষকদের জন্য শস্য বীমা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকার গবাদিপশু বীমা চালু করা, দরিদ্র নারীদের ক্ষুদ্র বীমার আওতায় আনার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করা এবং সরকারি কর্মচারী ও সাধারণ মানুষের জন্য স্বাস্থ্য বীমা চালু করার পরিকল্পনা করেছে। বীমা খাতে ডিজিটাইজেশন ও এর পেনিট্রেশন বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
পণ্য রফতানিতে সব খাত থেকে সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর ফলে দেশের তৈরি পোশাক বিদেশের বাজারে রফতানির জন্য প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের জন্য ৬টি বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।
কর যোগ্য হওয়ার পরও কর দিচ্ছেন না, এমন ১ লাখ ব্যক্তিদের করের আওতায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মত বেসরকারি কর্মচারীদের জন্য পেনশন ফান্ড গঠন করা হয়েছে।
কাজের বিনিময়ে খাদ্য খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা, বয়স্ক এবং বিধবা নারীদের জন্য আলাদা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আগের বছরের মতোই এবারও বাদ যায়নি বেদে, হিজড়া এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, আগামী পাঁচ বছরের পরিকল্পনা মাথায় রেখেই সরকার তাদের প্রথম বাজেট করতে যাচ্ছে। এ বাজেটের সঙ্গে নির্বাচনী ইশতেহারে মিল রয়েছে। তবে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বাজেট বাস্তবায়ন করা। এতগুলো অর্থ সংগ্রহ করাটা বেশ কঠিন হয়ে যাবে। কর ব্যবস্থায় বড় সংস্কার আনতে হবে। সেই সঙ্গে কৃষি, শিক্ষাসহ যেসব খাতে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করা আরও একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।’