ব্যাংক খাতের বর্তমান অবস্থার উন্নয়নের জন্য ছয় ধরনের সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বিকেলে জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় এ প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী।
এ সময় তিনি বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতে শুরু থেকে আজ পর্যন্ত বিশেষ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কোনো সংস্কার দেখিনি। ব্যাংক থেকে কোনো ঋণ গ্রহীতা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধে ব্যর্থ হলে তার জন্য কোনো ‘এক্সিটে’র ব্যবস্থা ছিল না। আমরা এবার এই কার্যক্রমটি আইনি প্রক্রিয়ায় সুরাহার লক্ষ্যে একটি কার্যকর ইনসলভেন্সি ও ব্যাংক্রাপ্টসি আইনের হাত ধরে ঋণ গ্রহীতাদের এক্সিটের ব্যবস্থা করছি।’
তিনি বলেন, ‘ব্যাংক ও আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা সুদৃঢ় করার জন্য একটি ব্যাংক কমিশন প্রতিষ্ঠার কথা আমরা দীর্ঘদিন ধরে শুনে আসছি। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’
‘আমরা লক্ষ্য করে আসছি, আমাদের আর্থিক খাতে বিশেষ কোনো ইনস্ট্রুমেন্টের ব্যবহার ছিল না। তাই ব্যাংকগুলো স্বল্প মেয়াদের আমানত সংগ্রহ করে দীর্ঘ মেয়াদের ঋণ দিতে বাধ্য হত। এতে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। এটা কখনো কখনো সঙ্কট সৃষ্টি করে থাকে। এই জাতীয় ভারসাম্যহীন অবস্থা দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। একটি গতিশীল বন্ড মার্কেটসহ অন্যান্য ইনস্ট্রুমেন্ট যেমন- ওয়েজ আর্নার্স বন্ড, ভেন্চার ক্যাপিটাল, ট্রেজারি বন্ড ইত্যাদির ব্যবহার উৎসাহিত করব,’ যোগ করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে আমরা ব্যাংকের মূলধনের পরিমাণ বাড়াব, ব্যাংক কোম্পানি আইনে সংশোধন আনব। আমাদের ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজস্ব ব্যবস্থাপনার অঙ্গগুলো যথা-ভ্যাট, কাস্টমস এবং আয়কর সংক্রান্ত আইনসহ অন্য কোনো আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয় তা নিশ্চিত করা হবে। প্রয়োজনে ব্যাংক একীভূতকরণ ও তা যেন আইনি প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা যায় তার জন্যও ব্যাংক কোম্পানি আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে। ঋণ গ্রহীতাদের মধ্যে যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করেননি (ইচ্ছাকৃত খেলাপি) তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
‘দেশের শিল্প ও ব্যবসা খাতকে প্রতিযোগিতা সক্ষম করার লক্ষ্যে আমরা ব্যাংক ঋণের ওপর সুদের হার এক অংকের ওপর দেখতে চাই না। এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি,’ যোগ করেন অর্থমন্ত্রী।
হোল্ডিং কোম্পানি এবং সাবসিডিয়ারি কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে ব্যাংক কোম্পানি আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা হবে বলেও জানান তিনি।