হতাশ টেলিকম সংশ্লিষ্টরা, বাজেট পুনর্বিবেচনার অনুরোধ

বাজেট, অর্থনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-25 16:04:09

সিম ও রিম সেবা, ভয়েস কলিংয়ে সারচার্জ বৃদ্ধি, স্মার্টফোনের উপর অধিক হারে কর আরোপ টেলিকম খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে দেশের টেলিকম অপারেটরগুলো। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বাজেট পরবর্তী এক তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় এ কথা জানিয়েছেন বিভিন্ন অপারেটরের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা।

প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় ডিজিটাল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ও মোবাইল অপারেটর ‘রবি’র পক্ষ থেকে বলা হয়, বাজেটে মোবাইল টেলিযোগাযোগ শিল্প সংশ্লিষ্ট খাতে যে সব কর আরোপ করা হয়েছে তা অত্যন্ত দু:খজনক। প্রস্তাবিত কর ব্যবস্থার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য বাস্তবায়নে মোবাইল টেলিযোগাযোগ খাতের গুরুত্ব একটি বড় হোঁচট খাবে । ইতিমধ্যে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাত উচ্চ করের বোঝায় জর্জরিত, যা বিশ্বে অন্যতম সর্বোচ্চ। উচ্চ করের বোঝা নিয়ে এ শিল্প সামনে কতোদিন টিকে থাকতে পারবে তা নিয়ে খাত সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞরা বার বার তাঁদের আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেছেন।

বিদ্যমান কর কাঠামোতেই বাজারে টিকে থাকা চারটি অপারেটরের মধ্যে তিনটিকেই বছরের পরে বছর লোকসানের বোঝা টেনে যেতে হচ্ছে। লোকসান গুনলেও এতদিন তিন অপারেটরের বিনিয়োগকারীদের অনেকটা বাধ্য হয়েই দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে নূন্যতম কর দিয়ে আসতে হচ্ছিল। এবারের বাজেট নূন্যতম এ কর হার বাড়িয়ে ২ শতাংশ করা হয়েছে, যা আমাদের যারপরনাই হতাশ করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে যে মোবাইল অপারেটররা বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করেছে, তাদের ওপর এমন কর হারের চপেটাঘাত একেবারেই অপ্রত্যাশিত। টিকে থাকার যুদ্ধে হিমশিম খাওয়া মোবাইল টেলিযোগাযোগ শিল্পের যখন প্রয়োজন সহযোগিতা ঠিক সে সময়ে এমন কর হার আরোপ আত্মঘাতী।

 বাংলালিংক-এর চিফ কর্পোরেট এ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, ‘গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষার্থে টেলিকম খাতের যে বিষয়গুলি আমরা দীর্ঘ সময় ধরে উত্থাপন করে আসছি সেগুলি এবারের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে প্রতিফলিত না হওয়ায় আমরা আশাহত। দেশের ডিজিটাল বিপ্লবকে ত্বরান্বিত করার জন্য আমরা প্রতিনিয়ত গ্রাহকদের সাশ্রয়ী মূল্যে সেবা দেওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এমন একটি পরিস্থিতিতে মোবাইল ফোন সিম/রিম কার্ডের মাধ্যমে প্রদানকৃত সেবার উপর সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১০ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া সিমের উপর কর ১০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২০০ টাকা করা হয়েছে। সম্পূরক শুল্ক ও সিম করের এই বৃদ্ধি দেশে ডিজিটাল সেবার প্রসারকে ব্যাপক ভাবে বাধাগ্রস্ত করবে বলে আমরা মনে করি।

এর পাশাপাশি স্মার্টফোনকে উচ্চবিত্তদের ব্যবহারযোগ্য পণ্য হিসেবে বিবেচনা করে এর উপর শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে ফোরজি সেবা চালু হবার পর থেকে দেশের জনসাধারণের মধ্যে স্মার্টফোনের ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, কারণ সকল শ্রেণীর মানুষ বিভিন্ন ডিজিটাল সুবিধা ব্যবহারের মাধ্যম হিসেবে স্মার্টফোন ব্যবহার করতে শুরু করেছে। এছাড়া বাজেটে মোবাইল কোম্পানির আয়ের উপর সর্বনিম্ন শুল্ক ০.৭৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ২ শতাংশ করা হয়েছে। এর ফলে যেসব মোবাইল কোম্পানি এখনো লাভজনক নয় সেগুলির করের বোঝা আরও বেড়ে যাবে এবং শেয়ার হোল্ডাররা এগুলিতে বিনিয়োগ করতে নিরুৎসাহিত হবে।

অপারেটররা  বাংলাদেশ সরকারকে দেশের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ ও সত্যিকার অর্থে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে এই বিষয়গুলি পুনর্বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ জানান।  

এ সম্পর্কিত আরও খবর