নতুন ভ্যাট আদায়ের হার পাঁচ স্তরের

বাজেট, অর্থনীতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 21:30:52

চার নয়, নতুন মূল্য সংযোজন কর (মূসক) তথা ভ্যাট আইনের হার রাখা হচ্ছে পাঁচ স্তরের। এই স্তরগুলো হচ্ছে- ২, ৫, ৭.৫, ১০ ও ১৫ শতাংশ। আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন এই ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন শুরু হবে।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে এই আইন পেশ করবেন। পুরনো আইনে ভ্যাটের স্তর ছিল ৭টি।এগুলো হচ্ছে ২, ৩, ৪.৫, ৫, ৭, ১০ ও ১৫ শতাংশ।

অথচ চলতি বছরেই অর্থমন্ত্রী ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান বলেছিলেন ভ্যাট স্তর হবে চারটি। তার আগে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছিলেন, ভ্যাট আইনে স্তরের হার থাকবে ১টি। সেটি হবে ১৫ শতাংশ।

তারপর ব্যবসায়ীদের আপত্তিতে সেই হার পরিবর্তন করে চলতি বছরের প্রথমদিক থেকে ৪টি করা হবে বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু অবশেষে বাজেটে ভ্যাটের স্তর রাখা হচ্ছে ৫টি। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমঝোতা করে তাদের দাবির আদলেই এই ভ্যাট আইন করা হচ্ছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, তারপরও নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করাই সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

এনবিআর সূত্র জানায়, নতুন ভ্যাট আইনে ১ হাজার ৯৮৩টি পণ্যকে আওতার বাহিরে রাখা হয়েছে। এই আইনে থাকছে না প্যাকেজ ভ্যাট। এছাড়াও বছরের ৫০ লাখ টাকার কম লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠান ভ্যাট মুক্ত রাখার পাশাপাশি ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দেওয়া প্রতিষ্ঠানের জন্য রাখা হচ্ছে রেয়াত সুবিধা।

নাম না প্রকাশের শর্তে এনবিআরের এক সদস্য বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সরকারের রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৯১ সালের ভ্যাট আইন পরিবর্তন করে আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন কার্যকর করা হবে। তবে আইনের আদলেই নতুন আইনটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘নতুন আইনে ওষুধ, জ্বালানি পণ্য পেট্রোলিয়াম ও নির্মাণ সামগ্রীর অন্যতম উপকরণ রড, বিভিন্ন জাতের মসলা, কাগজসহ বেশ কিছু পণ্যে বিশেষ ব্যবস্থায় কম হারে ভ্যাট হার নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই আইন বাস্তবায়ন হলে জনজীবনে কোনো প্রভাব ফেলবে না। যাতে দাম সহনীয় থাকে। এতে সর্বনিম্ন ২ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশসহ মোট ভ্যাটের হার হচ্ছে পাঁচটি।’

এনবিআরের সূত্র মতে, ভ্যাট জমা দেওয়াসহ এনবিআরের অনলাইন ব্যবস্থার পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা, নতুন ভ্যাট হারে মধ্যে পণ্য বা সেবা আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ, উৎপাদনে ১০ শতাংশ, পাইকারি পর্যায়ে ৭.৫ শতাংশ এবং খুচরায় ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ হবে। প্রথমে চারটি ভ্যাট হার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এখন আরেকটি নতুনহার করা হচ্ছে। এত দিন যেসব পণ্য বা সেবায় ট্যারিফ মূল্য ও সংকুচিত ভিত্তিমূল্যের ওপর ভ্যাট দিত, সেখানে ২ শতাংশ হারে ভ্যাট নির্ধারণ করা হচ্ছে।

এ ছাড়া মৌলিক খাদ্য, নির্ধারিত জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, গণপরিবহন সেবা, গণস্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, কৃষি, মৎস্য চাষ, দাতব্য প্রতিষ্ঠানের অবাণিজ্যিক কার্যক্রম, অলাভজনক সাংস্কৃতিক সেবা—এসব ক্ষেত্রে মূসক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এই তালিকায় ১ হাজার ৯৮৩টি পণ্য ও সেবা আছে।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করার পক্ষে আমরাও।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর