প্রাণ-আরএফএলের তিন প্রতিষ্ঠানকে শোকজের সিদ্ধান্ত

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 18:14:41

প্রাণ-আরএফএলের তিন প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করবে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট, ঢাকা। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে-অল প্লাস্ট বিডি লিমিটেড, ময়মনসিংহ এগ্রো লিমিটেড এবং ময়মনসিংহ এগ্রো লিমিটেডের ইউনিট-৩।

মঙ্গলবার (৭ মে) তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের বন্ড সুবিধা অপব্যবহারের অভিযোগে আলাদাভাবে দায়ের করা তিনটি মামলার প্রেক্ষিতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে বৃহস্পতিবার (৯ মে) কিংবা রোববার (১২ মে)।

বুধবার (৮ মে) বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার এসএম হুমায়ুন কবির।

তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠান তিনটির বিরুদ্ধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের পক্ষ থেকে কাস্টমস আইন ভঙ্গ করে ৬৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকার বন্ডেড পণ্য খোলাবাজারে বিক্রি করায় এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা এই অভিযোগ আমলে নিয়েছি। প্রাথমিক অবস্থায় কোম্পানির কাছে জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হবে। চিঠিতে এক থেকে দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হবে। নির্ধারিত সময়ে প্রমাণসহ শুনানিতে অংশ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।

সঠিক উত্তর না দিতে পারলে অন্যান্য কোম্পানির মতো প্রতিষ্ঠান তিনটির বন্ডেড লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

উল্লেখ্য, গত দেড় মাসে ঢাকা ও চট্টগ্রাম কাস্টমস মোট ৫৯টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে প্রায় ৩০টির। বাকি ২৯টির আরো কিছু দিন সময় লাগবে।

এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) শহিদুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২৯ এপ্রিল সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে নয় সদস্যের দল প্রাণ-আরএফএলের রফতানিমুখী তিন বন্ডেড প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করে।

অভিযানে তিন প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত গুদামে (বন্ডেড ওয়্যারহাউজ) বন্ড রেজিস্ট্রারে উল্লেখিত মজুদের চেয়ে চার হাজার ১৮ মেট্রিক টন পণ্য কম পাওয়া যায়। যার শুল্ক করসহ মূল্য ৬৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। ফাঁকি দেওয়া শুল্ক করের পরিমাণ ১৭ কোটি ৫৫ লাখ। এ টাকা আদায়ের জন্য কাস্টমস আইনে আলাদা আলাদা তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকির মামলা দায়ের করে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট ঢাকায় পাঠানো হয়।

অভিযান সূত্রে জানা যায়, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের কোম্পানি অল প্লাস্ট বিডি লিমিটেডের বন্ডেড ওয়্যারহাউজে বন্ড রেজিস্ট্রার অনুযায়ী, চার হাজার ১১ দশমিক ৩৭ মেট্রিক টন পণ্য (পিপি, এলডিপিই, এলএলডিপিই, এইচডিপিই, মুদ্রণ কালি ইত্যাদি) মজুদ থাকার কথা থাকলেও সরেজমিন দুই হাজার ৮৭৩ দশমিক ২৪ মেট্রিক টন পণ্য কম পাওয়া যায়। শুল্কসহ ফাঁকি দেওয়া পণ্যের মূল্য ৪৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। ফাঁকি দেওয়া শুল্কের পরিমাণ ১২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের কোম্পানি ময়মনসিংহ এগ্রো লিমিটেডের বন্ডেড ওয়্যারহাউজে বন্ড রেজিস্ট্রার অনুযায়ী, ১৫০ দশমিক ১১ মেট্রিক টন পণ্য মজুদ থাকার কথা থাকলেও অভিযানে ৩০ দশমিক ৭৮ মেট্রিক টন পণ্য কম পাওয়া যায়। ফাঁকি দেওয়া পণ্যের শুল্কসহ মূল্য এক কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ফাঁকি দেওয়া শুল্কের পরিমাণ ৬৫ লাখ টাকা।

একই গ্রুপের কোম্পানি ময়মনসিংহ এগ্রো লিমিটেডের ইউনিট তিন নামীয় প্রতিষ্ঠানে বন্ডেড ওয়্যারহাউজে বন্ড রেজিস্ট্রার অনুযায়ী, এক হাজার ৭৯২ দশমিক ৩২ মেট্রিক টন পণ্য (ফিল্ম এলডিপিই ইত্যাদি) মজুদ থাকার কথা থাকলেও সরেজমিন এক হাজার ১১৩ দশমিক ৯৮ মেট্রিক টন পণ্য কম পাওয়া যায়। ফাঁকি দেওয়া পণ্যের শুল্কসহ মূল্য ১৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা। ফাঁকি দেওয়া শুল্কের পরিমাণ চার কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর