নারী পোশাক শ্রমিকদের ৬২ শতাংশই যৌন হয়রানির শিকার

পোশাক শিল্প, অর্থনীতি

ঊর্মি মাহবুব, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 03:17:57

আজ (৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস। একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে পালিত হয়ে আসছে এ দিবসটি। তবে দিবসটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে ১৯৭৫ সালে। প্রতি বছর এই দিবসে নারীদের অধিকার ও দাবি নিয়ে নানা আলোচনা চলে। কিন্তু তার কতটুকু বাস্তবায়ন হয়- সেটা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের তথ্য মতে, পোশাক শিল্পের ৮০ শতাংশই নারী শ্রমিক। যাদের ৬২ শতাংশই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যৌন হয়রানির শিকার হন। তবে চাকরি হারানোর ভয়ে কেউ অভিযোগ করার সাহস পান না।

মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার অভি ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিক ছিলেন আছমা (ছদ্মনাম)। কাজ শুরু পর থেকেই মালিকের নজরে পরেন তিনি। পরে কু প্রস্তাবে রাজি না হওয়া তাকে চাকরি হারাতে হয়। এ বিষয়ে আসমা বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘কারখানার মালিক আমাকে রুমে ডেকে নিয়ে কুপ্রস্তাব দিত। রাজি না হওয়ায় আমাকে কারখানা থেকে বের করে দেয়। পরে অন্য একটা কারখানায় কাজ নিয়েছি।’

টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তপন সাহা বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘কাজের সময় ছোট ছোট ভুলের জন্য সুপারভাইজার বা লাইন চিফরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। অনেক সময় কারখানার ভেতরে ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা প্রতিবাদ করতে পারেন না। কারণ প্রতিবাদ করলে চাকরি চলে যায়। এমনকি পরবর্তীতে অন্য কারখানায় কাজ পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।’

তিনি আরো বলেন, ‘মালিকরা যদি তাদের কারখানায় এসব বন্ধ করতে পারেন তাহলে নারী শ্রমিকরা আরো নিরাপদে কাজ করতে পারতেন।’

এদিকে পোশাক কারখানায় যৌন হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) প্রথম সহ-সভাপতি মনসুর আহমেদ বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘পোশাক কারখানার কাজের পরিবেশ এখন অনেক উন্নত। কারণ কারখানাগুলোকে কমপ্ল্যায়েন্সের আওতায় আনা হচ্ছে। যেসব কারখানার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে তাদের এই তালিকায় রাখা হয় না। তবে দু’একটি কারখানায় হয়রানির ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। কিন্তু সেটা কখনোই ৬২ শতাংশ হবে না।’

এ বিষয়ে গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফেডারেশনের সভাপতি মোশরেফা মিশু বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘কারখানা মালিকরা বরাবরই এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রায়ই এমন অভিযোগ শোনা যায়। নারী শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে ও বাইরে এ ধরণের হয়রানির শিকার হন। কিন্তু মালিকরা এসব দেখেও না দেখার ভান করেন। তাই কারখানায় যৌন হয়রানি বন্ধ করতে সবাইকে এক সাথে কাজ করতে হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর