প্রণোদনা ও বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে ঝামেলা কমায় রেমিট্যন্সে অবিশ্বাস্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) জুম অ্যাপসের মাধ্যমে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘করোনার মধ্যেও জুলাইয় ও আগস্টে গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। চলতি বছরের জুলাই এবং আগস্ট মাসে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি ৫০ শতাংশ। গত বছর ছিল রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে সবচেয়ে হায়েস্ট আর্নিং বছর। গত বছর ১৮ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গত বছরের তুলায় ৫০ ভাগ বৃদ্ধি এটা অবিশ্বাস্য একটা ঘটনা। ছয় মাসে যেটা পেতাম দুই মাসেই সেটা এসে গেছে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই যে পরিমাণ রেমিট্যান্স আয় হয় তার পুরোটাই বৈধপথে দেশে আসুক। আমি যখন পরিকল্পনা মন্ত্রী ছিলাম তখন আমি নিজ উদ্যোগে একটা স্টাডি করেছিলাম। স্টাডিতে দেখা গেছে ৫১ শতাংশ রেমিট্যান্স আসে বৈধ পথে আর ৪৯ শতাংশ আসে অবৈধ বা হুন্ডির পথে। আমি তখন থেকেই ভাবতে আরম্ভ করলাম যে শতভাগ রেমিট্যান্স বৈধ পথে আনতে হবে। সেজন্য আমরা দুটি কাজ করি। একটি হচ্ছে রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা প্রদান। রেমিট্যান্স বাড়ার বিষয়ে এ প্রণোদনা কাজ করেছে। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে, আগে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোটা ছিলো অনেক জটিল। নানাবিধ প্রশ্ন করা হতো, এখন এগুলো সহজ করে দিয়েছি। গত এক বছর যাদের রেমিট্যান্স এসেছে কাউকে প্রশ্ন করা হয়নি। কারো রেমিট্যান্স মার যায়নি। সে জন্যই এত রেমিট্যান্স বেড়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রবাসীরা অনেক কষ্ট করে টাকা আয় করে আমাদের সাপোর্ট দিচ্ছেন। পাশাপাশি তারা নিজেরাও শক্তিশালী হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাদেরকে আমি ধন্যবাদ জানাই। কারণ তারা তাদের কষ্টার্জিত অর্থ বৈধ পথে পাঠানো শুরু করেছে। আপনারা বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠান। কোনো না কোনো দিন এর সুফল আপনারা পাবেন।’
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টে ১৯৬ কোটি ৩৯ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। চলতি বছরের জুলাইয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ডলার সমপরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। একক মাস হিসাবে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। এর আগে সর্বোচ্চ রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছিল চলতি বছরের জুনে। ওই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার।