জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের শুরু থেকেই ছাত্রলীগের নাম আসছে। আর তাই নিজেদের অস্তিত্ব ও কমিটিকে বাঁচিয়ে রাখতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে গিয়ে উপাচার্যের দুর্নীতিকে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জাবি শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।
জাবি শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, জাবি উপাচার্যের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগসহ নানা কারণে পদ হারান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শোভন ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বানী। আর এর সঙ্গে সঙ্গে জাবি শাখা ছাত্রলীগের নানা অনিয়মের কথা উঠে আসে।
আরও জানা যায়, উপাচার্য কাছ থেকে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে ক্যাম্পাস ছাড়েন জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চল। এরপর থেকে জাবি শাখা ছাত্রলীগ দুই অংশ বিভক্ত হয়।
জাবি শাখা ছাত্রলীগের একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে সংগঠনটির সভাপতি জুয়েল রানার হাতে। জুয়েল রানা নিজের সভাপতিত্ব ও কমিটি টিকিয়ে রাখতে উপাচার্যকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। তবে জাবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে থাকা অংশটি নিষ্ক্রিয় রয়েছে বলে জানা যায়।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) জাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মী ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
জাবি শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, সভাপতির নিয়ন্ত্রণে থাকা ছাত্রলীগের অংশটি উপাচার্যের সকল দুর্নীতির পক্ষে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। কারণ তারা জানে উপাচার্যের অপসারণ হলে বিতর্কিত এই কমিটি থাকবে না। এছাড়া নতুন কমিটি হলে অনেকে পদও হারাবেন। এই ভয়ে উপাচার্যের সকল অবৈধ কাজে তারা সমর্থন দিচ্ছে।
উপাচার্য অপসারণের আন্দোলন সক্রিয় জাবি সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম পাপ্পু বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম বলেন, উপাচার্যের অনেক দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে জাবি শাখা ছাত্রলীগ সরাসরি জড়িত। এখন যদি উপাচার্যের অপসারণ হয়, তাহলে তাদেরও দুর্নীতির কথা বের হয়ে আসবে এবং কমিটি ভেঙে যাবে। নিজেদের অপকর্ম ফাঁস হওয়ার ভয়ে এবং কমিটি বাঁচানোর জন্য জাবি ছাত্রলীগের একটি অংশ এই সমর্থন দিচ্ছে। যদিও এই দুর্নীতিবাজ কমিটিকে কোনো উপাচার্যই বাঁচাতে পারবে না।
তবে এসব অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করে হামলার বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, আমরা শিবিরমুক্ত ক্যাম্পাস চাই। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শিবির সংশ্লিষ্টতার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।