বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছে হল প্রশাসন। সোমবার (২১ অক্টোবর) থেকে এই অভিযান শুরু হয়। এতে অবৈধভাবে হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের উচ্ছেদসহ সিট বৈধকরণ করার কার্যক্রম চলছে।
জানা যায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ৩টি আবাসিক হলে মাত্র ৮৮৯টি আসন রয়েছে। ছেলেদের দুই আবাসিক হলের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৩০৭টি এবং শহীদ মুখতার ইলাহী হলে ২৪০টি সিট রয়েছে। অপরদিকে মেয়েদের একমাত্র আবাসিক হলে (বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব) ৩৪২টি সিট রয়েছে। মেয়েদের হলে থাকা নিয়ে কোনো সমস্যা না থাকলেও ছেলেদের দুই হলে অবৈধ শিক্ষার্থীদের দৌরাত্মের কারণে বৈধ শিক্ষার্থীরা তাদের সিটে উঠতে পারছেনা বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
হল প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে আবাসিক হলগুলোতে প্রথম বারের মতো শিক্ষার্থী ভর্তি করার পর ছাত্রদের দুই হলে আর কোনো শিক্ষার্থীকে সিট দেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে সকল সিট অনাবাসিক ও অছাত্রদের দখলে চলে যায়। বঙ্গবন্ধু হলে ৩০৭টি সিটের বিপরীতে আবাসিক ছাত্রের সংখ্যা মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ জন। বিগত প্রশাসনের সময় শিক্ষার্থীদের আবাসিকতা নিশ্চিত করার জন্য কোনো উদ্যোগ না নিলেও বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা ও নোটিশ প্রদান করে আসছিল। এতেও কোনো কাজ না হওয়ায় অর্থসংকটে পড়ে যায় আবাসিক হলগুলো। এতে করে সময়মত হল কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করতে না পারাসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়ে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য উপাচার্যের কঠোর নির্দেশনা ও হল প্রভোস্টের প্রচেষ্টায় অবৈধদের হল থেকে উচ্ছেদ ও অনাবাসিকদের আবাসিকতা প্রদানে এই অভিযান শুরু করেছে হল প্রশাসন।
এদিকে শহীদ মুখতার এলাহী হলে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে ২৪০টি সিটের বিপরীতে বৈধভাবে অবস্থান করছেন ১১৪ জন শিক্ষার্থী। বাকী ১২৬টি সিট বৈধকরণের জন্য চলতি মাসের ২২-৩০ তারিখের মধ্যে আবাসিকতার ফরম পূরণ করে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ৩১ অক্টোবর সকালে ভাইভা এবং বিকেলে ফলাফল এবং ৩ ও ৪ নভেম্বর ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার কথা জানানো হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির সদস্য সচিব তাবিউর রহমান প্রধান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই হলে অবস্থানকারী অবৈধ ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের বিষয়ে বারবার উদ্যোগ নেয়া হলেও কোনো কাজ হয়নি। কিন্তু এবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় হল প্রশাসন কঠোর অবস্থান নিয়েছে। আশা করি অল্প সময়ের মধ্যেই হল গুলোতে সম্পূর্ণ আবাসিক শিক্ষার্থীদের বৈধভাবে থাকার সুযোগ করে দেয়া সম্ভব হবে। এরপরেও হলের শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার জন্য যদি কেউ তৎপরতা চালানোর চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।