উপাচার্যপন্থী সংগঠনে 'জোরপূর্বক' শিক্ষকদের রাখার অভিযোগ!

বিবিধ, ক্যাম্পাস

জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-25 21:16:42

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যপন্থী ৩৫ জন শিক্ষক ও ৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়ে 'অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং উন্নয়নের পক্ষে জাহাঙ্গীরনগর' নামে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু কমিটিতে নাম থাকা অনেক শিক্ষকই সংগঠনটির বিষয়ে জানেন না।

ফলে 'জোরপূর্বক' এসব শিক্ষকদের কমিটিতে রাখার অভিযোগ উঠেছে উপাচার্যপন্থী শিক্ষক নেতাদের বিরুদ্ধে। এছাড়া শিক্ষা ছুটিতে থাকা এক শিক্ষককেও রাখা হয়েছে এ কমিটির তালিকায়।

কমিটির তালিকায় আছেন এমন চারজন শিক্ষক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে এ অভিযোগ জানিয়েছেন।

শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেন, দুর্নীতির দায়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানার বিরুদ্ধে চলমান অপসারণের আন্দোলনকে মোকাবিলা করার জন্য একটি পক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে ব্যবহার করছেন। তারা অনুমতি ছাড়াই একাধিক শিক্ষককে এই কমিটিতে রেখেছেন।

কমিটিতে নাম আছে কিন্তু শিক্ষা ছুটিতে আছেন এমন একজন শিক্ষক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'আমিতো শিক্ষা ছুটিতে আছি। কখন, কে, কোথায় আমার নাম দেয় বুঝিনা। আমি শুনেছিলাম একটা কমিটি হবে কিন্তু এর কাজ কি সেটা ক্লিয়ারলি জানিনা। সম্প্রতি চলমান আন্দোলন নিয়ে আমি একটা আর্টিকেল লিখেছিলাম। সেখানে কিছু প্রশ্ন তুলেছিলাম যে, অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পরে যে মানুষটা আসবে তিনি ঠিক থাকবেন কিনা। এ কারণে হয়তো কমিটিতে রাখা হয়েছে।'

কমিটির তালিকায় নাম থাকা আরেক শিক্ষক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'উপাচার্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত। এই অভিযোগ মোকাবিলা করতে হবে একমাত্র উপাচার্যকে। কিন্তু তিনি সেটা না করে শত শত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে তাদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও ব্যবহার করছেন। আমি বারবার বলার পরেও জোরপূর্বক আমাকে কমিটিতে রাখা হয়েছে।'

এ বিষয়ে নবগঠিত সংগঠন 'অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং উন্নয়নের পক্ষে জাহাঙ্গীরনগর'র মুখপাত্র অধ্যাপক মোহম্মদ আলমগীর কবীর বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'আমাদের সঙ্গে অনেকেই আছেন কিন্তু কমিটি গঠন করার সময় সবার সঙ্গে কথা বলা হয়নি। সেক্ষেত্রে এমন হয়ে থাকতে পারে। পরবর্তী সময়ে যাতে সবকিছু নিয়মমাফিক এবং সবার মতামত আমলে নিয়ে সব কাজ করা হয়, সে বিষয়টা খেয়াল রাখবো।'

এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সহস্রাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন উপাচার্যপন্থী শিক্ষক নেতারা। তবে উপাচার্য ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আয়োজিত মানববন্ধনে উপস্থিত হলেও কারণ জানতেন না অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অভিযোগ রয়েছে অফিসার সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়নকে ব্যবহার করে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে অনুষ্ঠানে আসতে বাধ্য করেন সংশ্লিষ্ঠ সংগঠনের নেতারা।

এ বিষয়ে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারের মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘উপাচার্যের দুর্নীতির দায় কেন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাথায় নেবে। এসব দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতার বিরোধিতা না করে পক্ষে দাঁড়ানো তো ঠিক না।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর