‘আমাদের দাবির দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখছি না’

বিবিধ, ক্যাম্পাস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-28 14:28:49

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার হত্যার বিচারসহ ৯ দফা দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের পঞ্চম দিন অতিবাহিত হলেও দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি দেখছে না শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বেলা ১১টায় বুয়েটের শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে এ মন্তব্য করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, দাবিসমূহ বাস্তবায়নে প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব দেখছি। গণমাধ্যমের অনুপস্থিতিতে গতকাল রানিং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভিসির বসতে চাওয়ার প্রসঙ্গে তুলে তারা বলেন এটা যেহেতু সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থী এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত থাকবে। আমরা ভিসি স্যারের সঙ্গে যখন কথা বলব মিডিয়া হবে আমাদের সাক্ষী। বুয়েট ক্যাম্পাসে এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে তার নিশ্চয়তা চাই।

সকাল ১১ টায় শহীদ মিনারে এসে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস ঘুরে এসে শহীদ মিনার সংলগ্ন রাস্তায় বসেন। জুমার নামাজ শেষে আবারো শহীদ মিনারে অবস্থান করবেন বলে জানান। এ সময় আন্দোলনের কর্মসূচী হিসেবে একটি পথনাটক অনুষ্ঠিত হয়। বিকাল সাড়ে ৩টায় বুয়েট অডিটোরিয়ামে প্রবেশ করবে সাধারণ রানিং শিক্ষার্থীরা। এসময় অবশ্যই সবাইকে আইডি কার্ড সঙ্গে রাখার অনুরোধ করা হয়। বিকাল ৫ টায় গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে ভিসির সঙ্গে বসবেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবি সমূহ

১. খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সিসিটিভি ফুটেজ ও জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে শনাক্তকারী খুনিদের প্রত্যেকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

২. বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সিসিটিভি ফুটেজ থেকে শনাক্তকৃত সবাইকে ১১ অক্টোবর, ২০১৯ বিকেল ৫টার মধ্যে আজীবন বহিষ্কার নিশ্চিত করতে হবে।

৩. মামলা চলাকালে সকল খরচ এবং আবরারের পরিবারের সব ক্ষতিপূরণ বুয়েট প্রশাসনকে বহন করতে হবে। এ মর্মে অফিশিয়াল নোটিশ ১১ তারিখ বিকেল ৫টার মধ্যে প্রদান করতে হবে।

৪. দায়েরকৃত মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের অধীনে স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি করতে বুয়েট প্রশাসনকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। বুয়েট প্রশাসনকে সক্রিয় থেকে সমস্ত প্রক্রিয়া নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং নিয়মিত ছাত্রদের আপডেট দিতে হবে।

৫. অবিলম্বে চার্জশিটের কপিসহ অফিশিয়াল নোটিশ দিতে হবে।

৬. বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক সংগঠনের ব্যানারে দীর্ঘদিন ধরে বুয়েটের হলে হলে ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করে রাখা হয়েছে। জুনিয়র মোস্ট ব্যাচকে সব সময় ভয়ভীতি প্রদর্শনপূর্বক জোর করে রাজনৈতিক মিটিং–মিছিলে যুক্ত করা হয়েছে। রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে যেকোন সময় যেকোন হল থেকে সাধারণ ছাত্রদের জোর প্রদর্শনপূর্বক বিতাড়িত করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে হলে হলে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। রাজনৈতিক সংগঠনের এমন কর্মকাণ্ডে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ। তাই আগামী ৭ দিনের মধ্যে (১৫ অক্টোবর) বুয়েটে সব রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রম স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।

৭. আবাসিক হলগুলোতে র‍্যাগের নামে ও ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর সব ধরনের শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন বন্ধে করতে হবে এবং এ ধরনের সন্ত্রাসে জড়িত সকলের ছাত্রত্ব প্রশাসনকে বাতিল করতে হবে। একই সঙ্গে আহসানউল্লা হল এবং সোহরাওয়ার্দী হলের পূর্বের ঘটনাগুলোতে জড়িত সকলের ছাত্রত্ব বাতিল ১১ অক্টোবর, ২০১৯ তারিখ বিকেল ৫টার মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে।

৮. পূর্বের ঘটনা এ ধরনের ঘটনার প্রকাশ এবং পরবর্তী সময়ে ঘটা যেকোনো ঘটনা প্রকাশের জন্য একটা কমন প্ল্যাটফর্ম রাখতে হবে এবং নিয়মিত প্রকাশিত ঘটনা রিভিউ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের ব্যবস্থা নিতে হবে। এই প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বুয়েটের বিআইআইএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে হবে এবং ১১ অক্টোবর, ২০১৯ তারিখ বিকেল ৫টার মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি প্রদর্শন করতে হবে। পরবর্তী ১ তারিখের মধ্যে কার্যক্রম পূর্ণরূপে শুরু করতে হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে সব হলের প্রত্যেক ফ্লোরে উইংয়ের দুপাশে সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা করতে হবে।

৯. রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে আবাসিক হল থেকে ছাত্র উৎখাতের ব্যাপারে অজ্ঞ থাকা এবং ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হওয়ায় শেরেবাংলা হলের প্রভোস্টকে ১১ অক্টোবর, ২০১৯ তারিখ বিকেল ৫টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর