দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্বৈরাচারী কায়দায় চলছে

, ক্যাম্পাস

জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-24 07:57:35

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্বৈরাচারী কায়দায় চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসক উপাচার্যদের আচরণ দিন দিন স্বৈরাচারী অবস্থানে চলে যাচ্ছে। যা স্বাধীন মত প্রকাশের অন্তরায় এবং সংবিধান বিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের 'অমর একুশ' ভাস্কর্যের সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক সাংবাদিককে বহিষ্কার ও লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে এ মন্তব্য করেন বক্তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা দাবি করেন, বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থী ও ডেইলি সানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ফাতেমা তুজ জিনিয়ার বিরুদ্ধে সাময়িক বহিষ্কার এবং তা প্রত্যাহারের নাটক সাজিয়ে হয়রানি এবং উপাচার্যের মদদে আলোকিত বাংলাদেশের প্রতিনিধি শামস জেবিনের ওপর যে হামলা করা হয়েছে তা ন্যক্কারজনক।

মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন- জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান, ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার, ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সদস্য রাকিবুল রনি, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আদিব আরিফ।

মানববন্ধনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক দেশ রূপান্তরের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হাসান আল মাহমুদ বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় জনগণের টাকায় চলা প্রতিষ্ঠান। এখানে যেসব ব্যক্তিদেরকে প্রশাসক হিসেবে রাষ্ট্র নিয়োগ দেয় তারা যদি বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কথা না শুনেন, ইচ্ছামতো বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে চান, তাহলে যে দেশে ঐতিহাসিক নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা পেয়েছে সেই দেশে এই ধরনের স্বৈরাচারী উপাচার্যদের জায়গা দেবে না। সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার জন্য সারাদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে যে ধরনের আয়োজন চলছে সেটা যেমন সাংবাদিকরা মেনে নেবে না তেমনি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না।'

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্বৈরাচারী কায়দায় চলছে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক যায়যায়দিনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মুসা বলেন, 'আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চাই। দেশের প্রত্যেকটা নাগরিক সংবিধানে উল্লেখিত অধিকার ভোগ করবে, সেই দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের এমন আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। গোপালগঞ্জের মতো পবিত্র ভূমিতে স্বৈরচারী উপাচার্যকে আর এক মুহূর্তের জন্য দেখতে চাই না।'

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সহ-সভাপতি ও ডেইলি স্টারের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, 'সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীর সঙ্গে বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্থানে এ ধরনের অবিচার এবং স্বৈরাচারী আচরণ প্রত্যাশিত নয়। বিশ্ববিদ্যালয় সহ সারা বাংলাদেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। জিনিয়ার সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্টদের নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।'

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, 'বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসকদের স্বৈরাচারী মনোভাব এবং শিক্ষার্থী সংক্রান্ত তাদের যে ভাবনা তা আমাদেরকে উদ্বেগের মধ্যে ফেলে দয়ে। বাংলাদেশে মুক্ত বুদ্ধি চর্চার জায়গা বিশ্ববিদ্যালয়, রাষ্ট্রের বিবেক বিশ্ববিদ্যালয়। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসকের বক্তব্য কখনো এমন নগ্ন হতে পারে না। আমরা বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের এমন আচরণের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর