জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দকৃত টাকা থেকে দুই কোটি টাকা ছাত্রলীগের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করার অভিযোগ তদন্তের দাবিতে আবারও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টায় 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর'এর ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুরাদ চত্বরে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তারা বুধবারের মধ্যে উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি মেনে নিতে বলেন। অন্যথায় আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে দুর্নীতির তদন্তে বাধ্য করা হবে বলে জানায় আন্দোলনকারীরা।
এছাড়া ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি-সম্পাদক উপাচার্যের কাছে চাঁদা দাবি করেছিলেন এ কথা তিনি এতদিন কেন গোপন রেখেছিলেন এর ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সদস্য রাকিবুল রনি বলেন, 'উপাচার্য কোনো তদন্তের দিকে না গিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন। তিনি গতকাল বলেছেন, কোনো টাকা লেনদেন করেননি, আমরা তার এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। উপাচার্যকে তদন্ত করে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে হবে।'
ছাত্র ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক শোভন রহমান বলেন, 'উপাচার্যের কাছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ টাকা দাবি করেছে সেটা তিনি এতদিন কেন প্রকাশ করেননি। আমরা এর সঠিক উত্তর চাই। আপনি এ সকল বিষয় আমাদের সামনে প্রকাশ করুন।'
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ জাবি শাখার মুখপাত্র খান মুনতাসির আরমান বলেন, 'জাহাঙ্গীরনগরের এই দুর্নীতির করাল গ্রাস দেশের সবাইকে ছুঁয়ে গেছে। দুর্নীতির খবর সবার সামনে আজ উন্মুক্ত। ছাত্রলীগ আপনার কাছে টাকা চেয়েছে আপনি কেন এতদিন এই খবর প্রকাশ করেন নাই। আপনাকে বহিরাগত কেউ টাকার জন্য চাপ দিলো তবু আপনি কোনো অভিযোগ করেননি। এতে বোঝা যায়, আপনি নিজেও একজন দুর্নীতিবাজ। তাই আমরা এই দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত চাই।'
উপাচার্যের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগকে টাকা দেওয়ার অভিযোগের তদন্তের বিষয়ে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত সময় নিয়েছিলেন উপাচার্য। এর আগে আন্দোলনকারীদের কোনো কর্মসূচি পালনের কথা না থাকলেও, 'উপাচার্য প্রকল্পের অর্থ থেকে শাখা ছাত্রলীগকে এক কোটি ৬০ লাখ টাকা দিয়েছেন' শোভন-রাব্বানীর এমন বক্তব্যের পরে রোববারের এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
প্রসঙ্গত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অপরিকল্পনার অভিযোগে তিন দফা দাবিতে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের চাপে গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আলোচনায় দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের দাবি ব্যতিরেকে অন্য দুটি দাবি মেনে নেয় প্রশাসন। দুর্নীতির অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আগামী বুধবার পর্যন্ত সময় নেয়। এ নিয়ে বুধবার আবারও আলোচনায় বসবে দু'পক্ষ।