দুর্নীতির বিষয় অমিমাংসিত রেখেই শেষ হলো আলোচনা সভা

বিবিধ, ক্যাম্পাস

জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-30 06:47:48

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ১৪৪৫ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প থেকে দুই কোটি টাকা ছাত্রলীগের মধ্যে বণ্টনের অভিযোগে গড়ে ওঠা আন্দোলন ও চলমান সংকট সমাধানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে আন্দোলনকারীদের তিন দাবির মধ্যে দ্বিতীয় দাবি দুর্নীতির বিষয় অমিমাংসিত রেখেই শেষ হলো আলোচনা সভা।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টায় নতুন প্রশাসনিক ভবনে আলোচনা শুরু হয়ে চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে আন্দোলনকারী ২২জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী আলোচনায় অংশ নেন।

আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুটি দাবি মেনে নিয়েছেন বলে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবির প্রথম এবং তৃতীয়টা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেনে নিয়েছে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সাধুবাদ জানাই। দ্বিতীয় দাবির ক্ষেত্রে তারা সময় নিয়েছে। আশা করি এটাও আন্তরিকতার সঙ্গে দেখবে। তবে দ্বিতীয় দাবি না মানা হলে কঠোর আন্দোলনের দিকে যাওয়ার কথা ভাববো।’

তিনি আরও বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের উত্তর-পশ্চিম পাশের হলটি ১০০ ফিট দূরে এবং দক্ষিণ ও পূর্ব পাশের নির্মিতব্য হল দুটি অন্যত্র স্থানান্তর করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর মাস্টারপ্ল্যান পুনর্বিন্যাসের ব্যাপারে যৌথ আলোচনার ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞ, বিশেষায়িত ও মনিটরিং নামে তিনটি কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটি মাস্টারপ্ল্যান পুনর্গঠন ও প্রকল্পের স্বচ্ছতার বিষয়ে সার্বিক তদারকি করবে।’

আরও পড়ুন: জাবিতে চলমান সংকট সমাধানে আলোচনায় দু’পক্ষ

অপরদিকে, দুর্নীতির তদন্তের জন্য ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরদিন বুধবার প্রশাসনের সঙ্গে আন্দোলনকারীরা আবার বৈঠকে মিলিত হবে বলে জানান সাংস্কৃতিক জোটের প্রচার সম্পাদক মারুফ মোজাম্মেল।

আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আমির হোসেন, অধ্যাপক নুরুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ, প্রকল্প পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন এবং নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) আহসান হাবিব ।

এদিকে, আন্দোলনকারীদের পক্ষে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক খবির উদ্দিন, অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, অধ্যাপক রায়হান রাইন, অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম ও অধ্যাপক তারেক রেজা।

এছাড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম পাপ্পু, প্রচার সম্পাদক মারুফ মোজাম্মেল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয়, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম অনিক, কার্যকরী সদস্য রাকিবুল রনি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার, সাংগঠনিক সম্পাদক শোভন রহমান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) শাখা সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দে, দফতর সম্পাদক রেবেকা আহমেদ এবং বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখপাত্র খান মুনতাসির আরমান, যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন শিশির ও আরিফুল ইসলাম আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।

এর আগে তিন দফা দাবিতে গত ৩, ৪ ও ৫ সেপ্টেম্বর টানা তিনদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। ৫ সেপ্টেম্বর অবরোধ চলাকালে উপাচার্য তাদেরকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিলে দাবির ব্যাপারে ‘আন্তরিকতার’ শর্তে প্রস্তাবে রাজি হয় তারা। ৭ সেপ্টেম্বর আলোচনা শুরুর আগ মুহূর্তে আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থীকে এক ছাত্রলীগ নেতার মারধরে আলোচনা ভেস্তে যায় আলোচনা সভা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর