ডাকসুকে ডাকসুলীগ বানাতে চায় ছাত্রলীগ: ভিপি নুর

, ক্যাম্পাস

ইমরান হোসাইন, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-28 14:27:22

ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদকে (ডাকসু) ডাকসুলীগ বানাতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন ডাকসু’র সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর। ডাকসু আয়োজিত কর্মসূচিতে ডাকসু ভিপিকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয় না—এ প্রশ্নের উত্তরে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ডাকসুর আয়োজনে ‘আমাদের ভাবনায় বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও প্রবন্ধ পাঠ অনুষ্ঠানের একটি পোস্টার নজরে আসে। পোস্টারে দেখা যায় আয়োজনে ডাকসু, সহযোগিতায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং ছাত্র পরিবহন পরিষদ, ঢাবি।

এতে অতিথি হিসেবে ছাত্রলীগের চার নেতার নাম থাকলেও (যাদের দুজন ডাকসু কর্তৃক নির্বাচিত নন) ডাকসু ভিপির নাম নেই। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেকে সমালোচনা করেন।

এ ব্যাপারে ডাকসু ভিপির প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে তিনি বলেন, নানাভাবে একটা বিতর্কিত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগের বড় একটা অংশ ডাকসুতে পদপদবি ধরে আছে। একটা বিতর্কিত নির্বাচন হয়েছে, প্রশাসন তাদের সহযোগিতা করেছে। তারপরও আমরা চেয়েছিলাম শিক্ষার্থীদের জন্য একসাথে কাজ করতে। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে দেখলাম তাদের চিন্তা-চেতনা সব ডাকসুকে অকার্যকর করার জন্য। তারা চায় না ডাকসুতে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করে কার্যকর রাখুক। ছাত্রলীগ ডাকসুকে ডাকসুলীগ বানাতে চায়।

ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, আখতার হোসেন ও আমাকে নানাভাবে ইগনোর করা হয়। বিভিন্ন জায়গায় লাঞ্ছিত করে যেন আমরা পিছপা হয়ে যাই। তারা নিজেদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য ডাকসুর নাম ব্যবহার করে। ডাকসুর নাম ব্যবহার করলে শিক্ষার্থীরা হয়তো অন্যভাবে নেবে, সে প্রবণতাও থাকে। ডাকসুর প্রোগ্রামে সহযোগিতায় ছাত্রলীগ লেখে। ডাকসুর প্রোগ্রামে ছাত্রলীগের সহযোগিতা লাগে না। ডাকসু চাইলে নিজেদের ব্যবস্থাপনায় কোটি টাকার প্রোগ্রামও করতে পারে।

ডাকসু এবং ছাত্রলীগ একই জিনিস বলে তারা উপাস্থাপন করতে চায় উল্লেখ করে নুর বলেন, তারা এটাই বোঝাতে চাচ্ছে যে, ডাকসু এবং ছাত্রলীগ একই জিনিস। ডাকসু নিয়ে যেন শিক্ষার্থীদের আলাদা কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা তৈরি না হয়—সে জন্য ডাকসুকে অকার্যকর করতে চাচ্ছে।

ভিপি নুর আরও বলেন, আগস্টের প্রোগ্রামে শিডিউলে আমি স্বাক্ষর করেছি। যদি স্বাক্ষর না করতাম তাহলে বলতো বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমি সম্মান প্রদর্শন করি না। তাদের চেহারা উম্মোচন করার জন্য প্রোগ্রাম শিডিউলে আমি স্বাক্ষর করে দিয়েছি।

ক্ষোভ প্রকাশ করে নুর বলেন, ডাকসুর প্রোগ্রামে ভিপির নাম নেই, ডাকসুর বাজেট হচ্ছে ভিপির উপস্থিতি নাই। প্রোগ্রামগুলো সম্পর্কে আমাকে জানানো হয়েছে, কিন্তু কে গেস্ট হবে, কত টাকা বাজেট হবে সেটা আমি জানি না। যেহেতু সবাই তারা, তাই যে যার মতো বাজেট নিচ্ছে, খরচ করছে। যেখানে দেখা যায় একান্ত ভিপি না হলে ভালো দেখা যায় না, সর্বজনীনতা পায় না—সেখানে ভিপিকে রাখে। ডাকসুর প্রোগ্রামে যদি ছাত্রলীগের ঢাবি শাখা সভাপতি সনজি চন্দ্র দাস, কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন থাকতে পারে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোকে কেন রাখা হয় না? ছাত্রলীগ ডাকসুকে তাদের মুখপাত্র বানাতে চায়।

‘আমাদের ভাবনায় বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজক ডাকসুর ছাত্রকল্যাণ পরিষদ সম্পাদক শামস ই নোমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে দেবেন বলে লাইন কেটে দেন। এরপর তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর