জবি ছাত্রলীগে সেশনজট

, ক্যাম্পাস

জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-24 15:53:41

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রলীগের কমিটিতে সেশনজট লেগেই আছে। তরুণ শিক্ষার্থীরা রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও পদ পায় পুরাতন এবং বয়স্ক নেতারা। এতে করে মাঠ পর্যায়ে কর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব দেখা দেয় শীর্ষ নেতাদের।

২০০৫ সালে জগন্নাথ কলেজ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর হওয়ার পর ২০১২ সালের ৩ অক্টোবর এফ এম শরিফুল ইসলামকে সভাপতি এবং সিরাজুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের প্রথম কমিটি ঘোষণা করা হয়। তারা দুইজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। ২০১২ সালে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ম ব্যাচের পদচারণা ছিলো। ফলে নেতাদের সঙ্গে দূরত্ব ছিলো কর্মীদের। এছাড়াও কমিটি এক বছরের জন্য ঘোষণা করা হলেও তারা চার বছর একই কমিটি চালিয়ে যান এতে পিছিয়ে পড়ে তরুণ রাজনীতি করা শিক্ষার্থীরা।

দীর্ঘ চার বছর পর ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দ্বিতীয় কমিটির মুখ দেখে। কিন্তু এখানে ও একইভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২তম ব্যাচের পদচারণা হলেও কমিটিতে নেতৃত্বে আসে চতুর্থ ব্যাচের তরিকুল ইসলাম এবং শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেল।  এতে করে শীর্ষ নেতা ও তৃণমূল কর্মীদের মাঝে সমন্বয়হীনতায় ক্যাম্পাসে নিয়মিত বিশৃঙ্খলা লেগেই ছিল। কর্মীরা নেতাদের আদেশ অমান্য চলত এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি প্রেম ঘটিত কারণে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করে কেন্দ্রীয় সংসদ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র নেতা মহিউদ্দিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সেরা একটি ইউনিট। ছাত্রলীগের এই ইউনিটকে গতিশীল ও শক্তিশালী করে রাখতে বিভিন্ন নেতৃত্ব উঠে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথম কমিটি শরিফ-সিরাজ কমিটি ( যা জবির প্রথম ব্যাচ থেকে দেওয়া হয়েছিল)। দীর্ঘদিন এই কমিটি থাকলেও পদবঞ্চিতদের তালিকায় এগিয়ে ছিলো অনেকে। এরপর ছিল তরিকুল- রাসেল কমিটি ( যা ছিল ৪র্থ ব্যাচ থেকে)। এই কমিটি প্রায় দেড় বছর থাকার পরও কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে না পারায় আবারো দীর্ঘদিন রাজনীতি করা শিক্ষার্থীরা পদবঞ্চিত হলো। তাই আমি চাই যোগ্য নেতৃত্ব ওবং সময়মত কমিটি কার্যকর হোক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জবি ছাত্র লীগের এক জুনিয়র কর্মী বার্তাটোয়েন্টিফোর কে বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সেশনজট দূর হওয়া জরুরি।  ভিসি ড. মীজানুর রহমান স্যার হয়তো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্ষেত্রে সেশনজট দূর করেছেন তবে ছাত্রলীগের সাবেক শীর্ষ নেতৃত্ব ছাত্রলীগের সেশনজট দূর করে যেতে পারে নি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নেতৃত্ব প্রদান করা নেতাদের নিজস্ব স্বার্থের বিবেচনায় হয়তো কর্মীরা আজ পরিচয়হীন। তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কর্মীরা কখনোই তাদের থেকে কম পরিশ্রমী নয়।

এ দিকে গত ২০ জুলাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দ্বিতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং কয়েকদিনের মধ্যে কমিটি ঘোষণা দিবেন বলে জানান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

জানা যায়, এবারও নেতা হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে বয়স্ক ও পুরাতনরা। জবি ছাত্রলীগের সম্মেলন চলাকালে  হিট স্ট্রোকে এস এম ওয়াসী নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী নিহত হয় কিন্তু এতে পদপ্রত্যাশী এক নেতা ছাড়া কাউকেই এগিয়ে যেতে দেখা যায় নি। ফলে এবারও সবাই ধারণা করছে পদপ্রত্যাশীরা কর্মী বান্ধব না। ফলে জুনিয়র কর্মীদের মাঝে আবারও দেখা দিয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর