র‌্যাগিংয়ের নামে থাপ্পড় দিয়ে কান ফাটালেন জাবি শিক্ষার্থীর

বিবিধ, ক্যাম্পাস

জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-31 12:33:05

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দ্বিতীয় বর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। র‌্যাগিংয়ের সময় থাপ্পড় দিয়ে প্রথম বর্ষের (৪৮ তম ব্যাচ) এক শিক্ষার্থীর কান ফাটিয়ে দেওয়া হয়। 

সোমবার (২৩ জুলাই) দিবাগত রাত ১টায় এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে সেখানে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হুমকি দেয় বলেও জানিয়েছেন র‌্যাগিংয়ের শিকার শিক্ষার্থী।

অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থী হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের মো. শিহাব, ইতিহাস বিভাগের সারোয়ার শাকিল ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ফয়েজুল নীরব। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ তম ব্যাচের ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

এদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ৪৮ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ফয়সাল আলম। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী ফয়সাল আলম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'রাত ১টায় অভিযুক্ত শাকিল গণরুমে এসে আমার পরিচয় জিজ্ঞেস করলে তাকে আমার পরিচয় দেই। কিছুক্ষণ পর  তিনি আবারও আমার পরিচয় জিজ্ঞেস করে। কিন্তু আমার ঠান্ডার সমস্যার কারণে জোরে পরিচয় দিতে পারছিলাম না। এসময় তারা চিৎকার করে ওঠে। র‌্যাগিংয়ের এক পর্যায়ে শিহাব আমাকে কিল ঘুষি দিতে থাকে। তখন ধারাবাহিক থাপ্পড়ে আমার কান ফেটে যায়। আমি সেন্সলেস হয়ে গেলে বন্ধুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে এসে শিহাব ও নীরবসহ চার-পাঁচজন আমাকে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়। এরপর বিকেলে অবস্থা খারাপের দিকে গেলে আমাকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।'

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ভাই মেহেদী হাসান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'ঘটনা জানার পরে আমার এক ভাইয়ের মাধ্যমে তাকে এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করি। ডাক্তার দেখে বলেন এখন তার কানে হাত দেওয়া যাবেনা রক্ত জমে আছে। একসপ্তাহ পরে জমাট বাঁধা রক্ত বের করতে হবে এখন বের করলে কানের পর্দা ফেটে যেতে পারে।' 

তিনি আরও বলেন, 'আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় হল প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেবো। আমরা চাই অপরাধীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি হোক।’

ঘটনার দায় স্বীকার করে অভিযুক্ত ফয়েজুল নীরব বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'তার কাছে পরিচয় জানতে চাইলে পরিচয় দেয় পরে। পরে আমরা তাকে কিছু নির্দেশনা দিলে তা পালনে অস্বীকৃতি জানায়। এসময় আমাদের বন্ধু শিহাব ফয়সালকে মেরে বসে। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঘটনাটি ঘটে গেছে। তবে বিষয়টি এত মারাত্মক হবে তা আমরা বুঝতে পারিনি।' 

এদিকে অভিযুক্ত মো. শিহাব ও সারোয়ার শাকিলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন রিসিভ করেনি।

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, 'এ ধরণের ঘটনা নির্মম, নিষ্ঠুর ও লোমহর্ষক। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবারের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা আজকের মধ্যে লিখিত অভিযোগ দেবেন। এ ব্যাপারে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর