আন্দোলনে উত্তাল বেরোবি, বিঘ্নিত শিক্ষার পরিবেশ

, ক্যাম্পাস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রংপুর | 2023-08-23 14:27:55

একের পর এক আন্দোলন আর শিক্ষক-কর্মচারীসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মুখোমুখি অবস্থানে উত্তাল হয়ে উঠেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)।

উপাচার্য-রেজিস্ট্রারসহ দায়িত্বশীল ঊর্ধ্বতন কেউ ক্যাম্পাসে না থাকায় জগাখিচুড়িতে পরিণত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম। স্থবির হয়ে পড়েছে একাডেমিক, প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা। এতে করে বেরোবিতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে মনে করছেন সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক ভবনে তালা, লাগাতার কর্মবিরতি, বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ, মানববন্ধনসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের দ্বিমুখী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস, পরীক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। বছরের বেশির ভাগ সময়ই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা কারণে আন্দোলন হয়ে থাকে। এতে করে হাজার হাজার শিক্ষার্থী সেশনজটে আটকে আছে। দীর্ঘ হচ্ছে শিক্ষাবর্ষের দিনপঞ্জিকা।

জানা গেছে, গত এক মাস ধরে তিন দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন, বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ, প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়াসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। তাদের দাবিগুলো হলো ৫৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বকেয়া বেতন পরিশোধ, নীতিমালা প্রণয়ন ও সময়মতো পদোন্নতি।

এসব দাবিতে এক মাস ধরে আন্দোলন করলেও কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি বাস্তবায়ন করছেন না বলে জানান কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের মুখপাত্র রবিউল ইসলাম।

বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে তিনি বলেন, ‘গত ২১ জুলাই ভিসি স্যার আমাদের সঙ্গে ক্যাম্পাসের বাইরে নগরীর সার্কিট হাউসে আলোচনার জন্য বসেছিলেন। কিন্তু তিনি স্থানীয় সাংসদ এইচ এন আশিকুর রহমানের ছেলে রাশেক রহমানকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন। সেইদিন আলোচনাটি ভেস্তে গেছে।’

অপরদিকে ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের দাবিতে বুধবার (২৪ জুলাই) মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের একাংশ। তারা শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। একই সঙ্গে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনারও দাবি জানান।

মানববন্ধনে অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালকের দায়িত্বে থাকা গণিত বিভাগের প্রফেসর ড. আর এম হাফিজুর রহমান সেলিম, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পরিচালকের পদে থাকা বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. পরিমল চন্দ্র বর্মন, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি প্রত্যাশী আপেল মাহমুদসহ বিভিন্ন পদে পদোন্নতি প্রত্যাশী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সদস্য সচিব মাসুম খান অভিযোগ করে বলেন, ‘ভিসি স্যার ধারাবাহিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামাল তিনিও গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে প্রশাসন ভবনে আসেন না। ভিসি, রেজিস্ট্রার দুইজনই ঢাকায় থাকেন। সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক শৃঙ্খলা কীভাবে আসবে?’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমান উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ গত দুই বছরে সাড়ে ৭শ দিনের মধ্যে সাড়ে ৫শ দিনই ঢাকায় থেকেছেন। ইদানিং তিনি ক্যাম্পাসেই আসছেন না। রংপুরে আসলেও নগরীর সার্কিট হাউসে অবস্থান করে জরুরি কিছু ফাইল স্বাক্ষর করে চলে যান। তার অনুপস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তা রিসিভ করেননি তিনি। তবে তার ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) আবুল কালাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, ভিসি স্যার জরুরি কাজে ঢাকায় অবস্থান করছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর