সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর হচ্ছে রাবির প্রথম প্রশাসনিক ভবন

, ক্যাম্পাস

রাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-23 01:52:04

রাজশাহীর পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রথম প্রশাসনিক ভবন 'বড়কুঠি' সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শনিবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় উপাচার্যের বাসভবনে সিন্ডিকেটের ৪৯১তম সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

তবে রাবি প্রশাসন নিজে থেকে বড়কুঠি হস্তান্তর করছে নাকি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এটিকে অধিগ্রহণ করছে বিষয়টি পরিষ্কার করেনি রাবি কর্তৃপক্ষ।

সিন্ডিকেট সভা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের জুন মাসে বড়কুঠিকে 'সংরক্ষিত প্রত্নসম্পদ' হিসেবে ঘোষণা করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। পরে এই ঘোষণা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশিত হয়। এ বছরের ১৪ মে রাবি প্রশাসনকে অবহিত করে চিঠি দেয় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। শনিবার সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান সিন্ডিকেটে বিষয়টি উত্থাপন করেন।

তবে সভায় তিনজন সিন্ডিকেট সদস্য রাবি প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেন। তারা হচ্ছেন- অধ্যাপক মো. আব্দুল আলিম, অধ্যাপক মো. হাবিবুর রহমান, এবং সহযোগী অধ্যাপক মোহা. মনিরুল হক। রোববার (৩০ জুন) তারা এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার দফতরে একটি চিঠি দিয়েছেন।

জানতে চাইলে অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, 'সভায় ২৩ নম্বর সিদ্ধান্তে উপাচার্য বিষয়টি উত্থাপন করেন। তখন উপাচার্য বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে বড়কুঠি সংরক্ষণের বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। তাই সিন্ডিকেট সভাকে বিষয়টি অবহিত করা হলো। এই কথা অনুযায়ী, সরকার এটি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই আমাদের কিছু বলার নেই।'

তিনি আরও বলেন, 'কিন্তু সিদ্ধান্তটি উত্থাপন শেষে উপাচার্য বলেন, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো। তখন আমরা তিনজন আপত্তি জানাই। যদি বড়কুঠি সংরক্ষণের বিষয়ে আমাদের মতামত চাওয়া হয়, তাহলে আমাদের কিছু বলার আছে। সিদ্ধান্ত দেওয়ার থাকলে, আমরা তাকে শিক্ষক সমিতিসহ শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে বলি। তবে উপাচার্য আমাদের আপত্তি মানতে চাননি। এর আগেও দুইবার বড়কুঠি হস্তান্তরের বিষয়টি সিন্ডিকেট সভায় ওঠার কথা ছিল। তবে শিক্ষকদের আপত্তির কারণে তা সিন্ডিকেটে তোলা যায়নি।'

শনিবার সিন্ডিকেট সভার আগ মূহুর্তে প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. হাবিবুর রহমান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস, ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক মু. আলী আসগর, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ছাদেকুল আরেফিন, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. ইলিয়াছ হোসেনসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক উপাচার্য এম আব্দুস সোবহানের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন।

এ বিষয়ে অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, 'সংরক্ষণের পাশাপাশি বড়কুঠির পরিচালনার দায়িত্ব সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হচ্ছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। আমরা বলেছি, এটা সংস্কার কিংবা সংরক্ষণ করা হলে আপত্তি নেই। তবে পরিচালনার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে থাকতে হবে। এর বাইরে কিছু করা হলে আমরা প্রতিরোধ করব।'

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এমএ বারী কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি জনসংযোগ দফতরের প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকার জানান, তিনি আগামীকাল সোমবার এ বিষয়ে কথা বলবেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর