ফের হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজুভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নেন ছাত্রলীগের নব্যগঠিত কমিটিতে পদবঞ্চিত ও কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়া নেতাকর্মীরা। দেখে বোঝার উপায় নেই এটা দাবি আদায়ের আন্দোলন। নেই কোনো উত্তেজনা কিংবা স্লোগান, নীরবে চলছে তাদের অবস্থান কর্মসূচি।
অপরদিকে তাদের পাশেই খুঁনসুটি আর হাসিতে আসর জমিয়ে তোলেন সংগঠনটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। এ সময় তিনি আন্দোলনরতদের সাথেও কথা বলেন। তাদের প্রশ্নের উত্তরও দেন।
রোববার (১৯ মে) ভোর বেলায় তাদের উপর ফের হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন পদবঞ্চিত অংশ। সেটির বিচার না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
কিন্তু রেজওয়ানুলহক চৌধুরী শোভনের খুঁনসুটি আন্দোলনকারীদের আন্দোলনের রূপ পরিবর্তন করে দেয়। তিনি তাদের সাথে রসাত্মকবোধক কথা বলে তাদের দমাতে সচেষ্ট হোন। আন্দোলনকারীরাও দুষ্টামির মধ্য দিয়ে তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করছেন।
শোভন বলেন, ‘তাদের কাছে ১২ ঘণ্টা সময় চাচ্ছি। এই সময়ের ভেতর আজকের হামলাকারী ও মধুর ক্যানটিনে হামলার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেব। এছাড়া যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে সেটার ডকুমেন্ট দেওয়ারও তাদের আহ্বান জানাই।’
অপরদিকে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী সভাপতির সাথে যোগ দেন সকালে। তিনি বলেন, ‘ওদের (আন্দোলনকারী) সাথে সংহতি জানাতে এসেছি, এছাড়া আর কী বলার আছে!’
সাংবাদিকদের সাথে আলাপচারিতায় রাব্বানী বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের কয়েকজন সিনিয়র নেতাদের নিয়ে যেভাবে ফেসবুক পোস্ট করছেন, এটা সরাসরি সংগঠন শৃঙ্খলা পরিপন্থী।’
তিনি বলেন, ‘রাতে যা হয়েছে, তার জন্য আমি সরি বলেছি। আমার ভুল হয়েছে আমি স্বীকার করছি। যারা অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, এখন দেখি তাদের বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ।’
এদিকে সকাল ৬টার দিকে ডাকসুর কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক বিএম লিপি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার সাথে যা হয়েছে তা আমি বলতে পারব না। সবকিছু আপাকে (শেখ হাসিনা) বলব।’
হামলার সাথে গোলাম রাব্বানী জড়িত কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে কিছু বলতে চায় না। তবে আমাদের সবাই লাঞ্ছিত হয়েছে।’
দীর্ঘ সময় ধরে নেতাকর্মীদের সাথে থেকে সবশেষে 'আমি গেলাম' বলে চলে যান রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। রাব্বানীও দীর্ঘ সময় ধরে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে বিএম লিপির মাথায় হাত দিয়ে রাব্বানী বলেন, ‘আমার বোন নাই। তুমি আমার বোন। প্লিজ এখন ফিরে যাও।’
এভাবে একবার হেসে উঠেন রাব্বানী, আবার নেতাকর্মীদের প্রশ্নের উত্তর। চলতে থাকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত। পরে গোলাম রাব্বানীও চলে যান। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে কোনো ধরণের সিদ্ধান্ত না আসলেও তারা এখনও অবস্থান করছেন।