ইবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, জরুরি অবস্থা, আটক ২২

বিবিধ, ক্যাম্পাস

ইবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 16:24:23

ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদভুক্ত পাঁচ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনের তিন দফা দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন তারা।

শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন ঠেকাতে ক্যাম্পাসে জরুরি অবস্থা জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের বহনকারী সব গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পাসে সকল প্রকার সভা সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।

এ অবস্থায় কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসতে না পারায় দশটি বিভাগের পূর্ব নির্ধারিত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির দাবিতে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) থেকে আমরণ অনশনে থাকা পাঁচ বিভাগের ২২ শিক্ষার্থীকে বুধবার ভোররাতে আটক করেছে পুলিশ। তাদের কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ বলেন, ‘‘২২ জন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। তাদর কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’

এর আগে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদভুক্ত পাঁচ বিভাগের শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন চলছিল। অনশনে কয়েকজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ার পরও প্রশাসন এবং অনুষদের ডিন শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা না করায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওইদিন দুপুর ২টার দিকে অনুষদের ডিন অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

এর ফলে অফিসের ভেতরে আটকা পড়েন ডিন অফিসের সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল মমিন ও পিওন মো. বাদল। এরপর রাত ৯টায় অবরুদ্ধ দুই কর্মচারীদেরকে উদ্ধার করতে আসেন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মমতাজুল ইসলাম ও ছাত্র-উপদেষ্টা ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ। তারা ভবনের ভেতরে ঢুকলে তাদেরকেও অবরুদ্ধ করেন আন্দোলনকারীরা।

পরে ডিন ও ছাত্র উপদেষ্টাকে উদ্ধার করতে রাত ১টার দিকে সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান ও বর্তমান প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. আনিছুর রহমান এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আহসান-উল হক আম্বিয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এরপর রাত ৪টা পর্যন্ত দফায় দফায় আন্দোলককারীদের সাথে সমঝোতা করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তারা।

এর আগে রাত সাড়ে ১১টা থেকেই ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পরে সাড়ে রাত ৪টার দিকে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত অতিরিক্ত ডিএসবি মোস্তাক, ডিএসবি মোস্তাফিজুর রহমান, মিরপুর জোনের এএসপি ফারজানা ইসলাম এবং ইবি থানার ওসি রতন শেখ তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করেন। ভেতরে আটকা পড়া ডিন, ছাত্র উপদেষ্টা ও দুই কর্মচারীকে উদ্ধার করেন তারা।

এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে আবার আন্দোলন শুরু করেন তারা।

তাদের দাবিগুলো হলো- অনতিবিলম্বে আকটকৃত সকল শিক্ষার্থীকে নিঃশর্তে মুক্তি দিতে হবে। সকল বৈষম্য দূর করে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির মান দিতে হবে। এছাড়া এ সব দাবি না মেনে নিলে আমরণ অনশন অব্যাহত থাকবে।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, ‘‘গতকাল (মঙ্গলবার) একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ দুই জেলার প্রশাসন এবং গোয়েন্দাদের সাথে কথা বলা হচ্ছে।’’

এ সম্পর্কিত আরও খবর