ক্যাম্পাসগুলোতে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

বিবিধ, ক্যাম্পাস

নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-20 05:37:03

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে গণহত্যা চালায় তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান সরকার। গ্রেফতার করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। কিন্তু গ্রেফতার হওয়ার কিছুক্ষণ আগে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রে স্বাক্ষর করেণ তিনি। সেই ঘোষণাপত্র জাতির উদ্দেশে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে পাঠ করা হয় কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই দিনটিকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তারপর থেকে প্রতি বছরই যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয় দিনটি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দিবসটি উদযাপন করেছে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হয়েছে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। সকাল ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কেন্দ্রীয় ভবন ও আবাসিক হলগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন শুরু হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় শহীদ মিনার থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত অদম্য পদযাত্রা করা হয়। সকাল সোয়া ৬টায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে পদযাত্রা শুরু হয়। পরে সেখানে অভিযাত্রী সংগঠনে উপদেষ্টা মফিদুল হক এবং ইনাম আল হক সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।

এরপর পদযাত্রীদল মুক্তির গান গাইতে গাইতে ২৫ মার্চ কালরাতের ভয়াল স্মৃতি বিজড়িত স্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জগন্নাথ হলে যান। সেখানে বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা।

সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। উপাচার্যের নেতৃত্বে ধানমণ্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতেও শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়।

জবি

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৭টায় সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.মীজানুর রহমান।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার অধ্যাপক মো. সেলিম ভূঁইয়া বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, রেজিস্ট্রার, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, দফতর প্রধান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকসহ ছাত্রনেতৃবৃন্দ।

এরপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন শিক্ষক সমিতি, নীলদল, কর্মকর্তা সমিতি, সাংবাদিক সমিতি, প্রেস ক্লাব, কর্মচারী সমিতি, সহায়ক কর্মচারী কল্যাণ সমিতি ও ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন সংগঠন।

জাবি

এদিকে দিবসটি উপলক্ষ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী মুক্তিসংগ্রাম সাংস্কৃতিক উৎসবের অংশ হিসেবে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় মোট তিনটি ক্যাটাগরিতে শতাধিক শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ক চিত্রাঙ্কন করে।

জাবির ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের তিন দিনব্যাপী এ আয়োজনের দ্বিতীয় দিনে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ছাড়াও রয়েছে বেলা ৩টায় জহির রায়হান মিলনায়তনে মুক্তিসংগ্রাম চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। এছাড়া বিকেল ৫টায় সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে আলোচনা অনুষ্ঠান ও সম্মাননা স্মারক প্রদান অনুষ্ঠান এবং সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের পরিবেশনায় মুক্তির গান পরিবেশিত হবে।

রাবি

যথাযথ মর্যাদা ও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) স্বাধীনতা দিবসে বিনম্র শ্রদ্ধায় জাতির সূর্য সন্তানদের স্মরণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। এদিন দিবসের প্রথম প্রহর রাত ১২টা ১মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা এবং অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়াসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারী, ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু, জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকার ও প্রক্টর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, অনুষদ অধিকর্তা, বিভাগীয় সভাপতি ও হলসমূহের প্রাধ্যক্ষরা।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা ও রাবি সাংবাদিক সমিতিসহ অন্যান্য সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে প্রশাসন ভবনসহ বিভিন্ন ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল সাড়ে ৬টায় বিভিন্ন আবাসিক হল, ইনস্টিটিউট, বিভাগ, অন্যান্য পেশাজীবী এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। সকাল ৭টায় গণকবর স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সকাল পৌনে ৯টায় শেখ রাসেল মডেল স্কুলে ও সকাল ৯টায় রাবি স্কুলে অনুষ্ঠিত হয় স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান। সকাল সাড়ে ৯টায় সাবাস বাংলাদেশ মাঠে বিএনসিসি, রোভার স্কাউট ও রেঞ্জারদের অংশগ্রহণে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়াম মাঠে অনুষ্ঠিত হয় প্রীতি ক্রিকেট ও ফুটবল ম্যাচ এবং প্রীতি হ্যান্ডবল ও ভলিবল ম্যাচ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর