ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের সম্ভাবনা জাগার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন নিয়েও আশার সঞ্চার হয়েছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে অচল থাকা রাকসু এবার সচল হবে বলে আশা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনগুলো। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে প্রচার-প্রচারণা। দ্রুত নির্বাচন দিয়ে অচল রাকসু সচল করার দাবিও জানিয়েছেন ছাত্র সংগঠনগুলো।
এদিকে রাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘পজিটিভ’ অবস্থানে রয়েছে। প্রশাসনের দাবি, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে শিগগিরই আলোচনা করা হবে। শিক্ষার্থীরা চাইলে রাকসু নির্বাচনে কোনো আপত্তি নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯৫৬-৫৭ সালে প্রথমবারের মতো রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তখন এ সংসদের নাম ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্ট ইউনিয়ন (রাসু)। পরে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বের গুণাবলী নির্ধারণ করে ১৯৬২ সালে রাকসু নামে যাত্রা শুরু করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ।
এর পর ১৯৮৯-৯০ সাল পর্যন্ত ১৪ বার অনুষ্ঠিত হয় রাকসু নির্বাচন। এর মধ্যে ১৯৭০-১৯৭২ সালে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। পরে সামরিক শাসনামল ১৯৭৫-৮০ এবং ১৯৮১-৮৮ সাল পর্যন্ত বন্ধ ছিল নির্বাচন। এরপর ১৯৮৯ সালের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দেশে নানা অস্থিরতার অজুহাতে বন্ধ আছে ছাত্র সংসদ নির্বাচন।
দ্রুত রাকসু নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে রাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, ‘এ বিষয় নিয়ে আমরা শিগগিরই প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসব। আগামী ৬ মাসের মধ্যে যেন রাকসু নির্বাচন দেওয়া হয় প্রশাসনের কাছে আমরা সেই দাবি জানাব।’
রাবি শাখা প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমন্বয়ক মহব্বত হোসেন মিলন বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি। ডাকসু নির্বাচনের একটা সম্ভাবনা জেগেছে। তাই দীর্ঘ ২৯ বছরর ধরে অচল রাকসু সচল করতে এখনও সোচ্চার আমরা।’
রাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘ক্যাম্পাসে সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে রাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নিতে হবে।’
রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘রাকসু নির্বাচন সময়ের দাবি, আমরা রাকসু নির্বাচন চাই। ছাত্র সংগঠনগুলোর জন্য রাকসু নির্বাচন দেওয়া হচ্ছে না বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মনে করলেও আমরা তা মনে করি না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলেই নির্বাচন দিতে পারে।'
জানতে চাইলে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘শিগগিরই এ বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসব। তারা চাইলে নির্বাচন দিতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।'