উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে বললেন কুবি শিক্ষক সমিতির সম্পাদক

, ক্যাম্পাস

কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-03-06 18:03:44

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে উপাচার্য এবং শিক্ষক সমিতির মধ্যকার বাকবিতণ্ডায়  স্থগিত হয় নিয়োগ পরীক্ষা। তারপর উপাচার্য দপ্তর ত্যাগ করার সময় প্রশাসনিক ভবনের গেইটে শিক্ষক সমিতির নেতারা উপাচার্যকে ঘিরে ধরেন। এখানেও বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি পদত্যাগ করেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদত্যাগ করেন।'

এই কথার জবাবে উপাচার্য এ এফ এম আব্দুল মঈন বলেন, ‘আপনার কথায় পদত্যাগ? হু আর ইউ টু আস্ক মি টু রিজাইন? হু আর ইউ?'

বুধবার (৬ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রশাসনিক ভবনের প্রবেশকক্ষে উপাচার্য এবং শিক্ষক সমিতির নেতাদের মধ্যকার এই বাকবিতণ্ডা চলে।

এছাড়াও বাকবিতণ্ডায় শিক্ষক সমিতির নেতারা খোদ উপাচার্যের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তার একাডেমিক সময়ে প্রকাশিত গবেষণা আর্টিকেলকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন। শিক্ষক সমিতির নেতাদের দাবি, উপাচার্যের নিজের কোন ভালো মানের আর্টিকেল নেই অথচ সেই উপাচার্য নিজে শিক্ষকদের পদোন্নতি আটকে রাখেন।

জবাবে উপাচার্য বলেন, আমার ৩৯টি আর্টিকেল রয়েছে। আর সেইসময় বিদেশি জার্নালে বাংলাদেশে লেখা কোনো আর্টিকেল গ্রহণ করতো না।
তিনি আরও বলেন, যারা অযোগ্য তারা প্রমোশন পাবে না। ভালো জার্নালে একটি আর্টিকেল লিখার যোগ্যতা তাদের নেই তারা কিভাবে প্রমোশন পাবে? কোন অযোগ্য শিক্ষককে আমি নিয়োগ দেই না, প্রমোশনও দেই না। পত্রপত্রিকায় অযোগ্য শিক্ষকদের লিস্ট দিলে দেখতে পাবেন কারা অযোগ্য, আমি তাদের প্রমোশন দেই না।

এক পর্যায়ে শিক্ষক সমিতির নেতারা প্রশ্ন তোলেন, আপনার একটি ভালো মানের ভালো জার্নালে প্রকাশনা নেই, তাহলে আপনি কিভাবে প্রফেসর হলেন?

জবাবে উপাচার্য বলেন, আমি ২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর হিসেবে প্রমোশন পেয়েছি। আমাকে যিনি নিয়োগ দিয়েছেন উনি আমারটা পরিমাপ করেই দিয়েছেন। আর আমি যাকে দিবো তারটাও পরিমাপ করেই দিবো।

বাকবিতণ্ডায় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বর্তমান প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী রানার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে তাকে বলেন, ‘আপনি শিক্ষকদের অপমান করেন, স্টপ হিম। স্টপ দিস ডাস্টবিন। দিস ইজ কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি।'

তখন উপাচার্য উনাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ না করতে বলায় মেহেদী হাসান বলে উঠেন, ‘আমি আপনার সাথে কথা বলছি না, আমি ওনার সাথে কথা বলছি।'

উপাচার্য কর্তৃক শিক্ষকদের ক্লাস না নেওয়ার অভিযোগে শিক্ষক সমিতির নেতারা বলেন, আপনি শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এভাবে মিথ্যাচার করতে পারেন না। আমরা ক্লাস না নিলে ক্লাস কে নেয়? আপনি তো ক্লাস নেন না। আমরা যদি ক্লাস না নেই তাহলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সেশনজট কমে এত এগিয়ে যাচ্ছে কীভাবে? র‍্যাংকিংয়ে উন্নয়ন হচ্ছে কীভাবে?

এর আগে সকাল ১০ টার দিকে শিক্ষক সমিতির নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম বহির্ভূত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, খামবিহীন খোলা নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র, বিশেষজ্ঞের অনুপস্থিতি, কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রশ্নপত্র পরীক্ষাকেন্দ্রে আনা, ডিন-বিভাগীয় প্রধানদের অনুপস্থিতিতে পরীক্ষা চালু করার অভিযোগ তুলে পরীক্ষায় বাধা দেন। পরবর্তীতে বেলা দেড়টার দিকে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী হলে এসে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর