চবিতে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, বিচার না পেয়ে ঘরবন্দি ছাত্রী!

, ক্যাম্পাস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো | 2024-02-03 06:19:20

শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ক্যাম্পাসে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই এবার সামনে এলো আরও এক ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনা।

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক ছাত্রের বিরুদ্ধে বারবার ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন এক ছাত্রী। গত বছরের ১৫ মে ভুক্তভোগী ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল-এ লিখিত অভিযোগ করলেও তিনি এখনো এই বিষয়ে কোনো বিচার পাননি।

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে বার্তা২৪’এর প্রতিবেদকের হাতে ছাত্রীর অভিযোগের একটি কপি আসে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আসিফ আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে বারবার ধর্ষণের অভিযোগ তোলা হয়েছে।

অবশ্য অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আসিফ আব্দুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পরই তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও রিসিভ করেননি।

অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, ‘আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নিয়মিত ছাত্রী। আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের আসিফ আব্দুল্লাহ নামের একজন ছাত্র দীর্ঘদিন যাবত বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনের পুকুর পাড়ে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে নিয়ে যায়। এরপর তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে আমার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন এবং কাউকে না জানাতে হুমকি প্রদান করেন। আমি আপনার কাছে তার উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।’

অভিযোগের নয় মাস কেটে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো সুবিচার দিতে পারেননি বলে অভিযোগ তুলেছেন ওই ছাত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমি গত বছরের মে মাসে একটা অভিযোগপত্র জমা দিই যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলে। কিন্তু তারপর আমি আর বিচার পাইনি। তবে, আমি এখনো হাল ছাড়িনি। কমিটির পিছনে একা একা ঘুরতেছি। এ পর্যন্ত তারা দুটি সভা ডেকেছেন। আরো একটি সভা হবে বলে দেরি করতেছেন। একটা বিচার পেতে আমাকে এত সময় ধরে কেন ঘোরানো হচ্ছে জানি না।’

বিচারের দাবিতে প্রায় প্রতিদিন যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলে যুক্ত শিক্ষকদের ফোন অথবা উপাচার্য অফিসে যান জানিয়ে ওই ছাত্রী আরও বলেন, ‘সব সময় আমাকে এটা-সেটা, ব্যস্ত বলে বলে দুই বার মিটিং করেছে। আরো নাকি মিটিং করবেন। আমি এরপরে বাসায় চলে আসছি। লাস্ট এক মাস যাবত আমি বাড়িতে। আমি খুব মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। ক্লাস বাদ দিয়ে বাসায় চলে আসতে হয়েছে আমাকে। আমি বিচারের আশ্বাসও পেয়েছিলাম। কিন্তু এখনো বিচার পাইনি।’

অভিযোগটি এখন কোন পর্যায়ে আছে জানতে চাইলে অভিযোগ কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. জরিন আখতার বলেন, ‘বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েটির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছে ছেলেটা। তারপর আর বিয়ে করছে না কেনো, সেটির শাস্তি দেওয়ার এখতিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই। এটির বিচার পেতে তাকে আদালতে যেতে হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর