চবিতে উপাচার্য পন্থিদের মানববন্ধন

, ক্যাম্পাস

চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, চট্টগ্রাম | 2023-12-19 16:38:51

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষক সমিতির কার্যকরী কমিটির একাংশের অযৌক্তিক এবং অন্যায় সিদ্ধান্তকে 'শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্ত' হিসেবে চালিয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছে উপাচার্যপন্থি সাধারণ শিক্ষকবৃন্দ। এ সময় শিক্ষক সমিতির হস্তক্ষেপকে অযাচিত হস্তক্ষেপ বলে দাবি করেন তারা।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে এগারোটায় বুদ্ধিজীবী চত্বরে উপাচার্যপন্থি সাধারণ শিক্ষকবৃন্দের প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সজীব কুমার ঘোষের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিন্ডিকেট সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. এনায়েত হক, শিক্ষক সমিতির সদস্য অধ্যাপক ড. ফরিদুল আলম ও অধ্যাপক ড. রকিবা নবী, পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক শ্যামল রঞ্জন চক্রবর্তী, জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজনীন নাহার ইসলাম, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম, চবি প্রক্টর ড. নুরুল আজিম সিকদারসহ সহকারী প্রক্টরবৃন্দ।

সমাবেশে উপাচার্যপন্থি সাধারণ শিক্ষকবৃন্দ দাবি করেন যে, বাংলা ও আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের নির্বাচনী বোর্ড আয়োজনে বাঁধা দিয়ে শিক্ষক সমিতির একাংশ উপাচার্যের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। তারা উপাচার্যকে তোপের মুখে ফেলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে সবকিছু যখন স্থিতিশীল তখন শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অমান্য করে উপাচার্যের কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে তার প্রতি অপমানজনক, বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ করেছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল উপাচার্যের কার্যালয় দখল করবে, যা কখনোই কাম্য নয়। তাদের দাবি পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়ে সবকিছুর জন্যই আলাদা আলাদা পর্ষদ আছে। চবি প্রশাসন আইন মেনেই সকল নিয়োগ বোর্ড আয়োজন করেছে বলে মানববন্ধনে দাবি করা হয়।

সমিতির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরিদুল আলম বলেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি থাকলেও বিভিন্ন স্থানে সাধারণ সম্পাদক সভাপতিত্ব করেন, যা লজ্জাজনক। আমাদেরকে সমিতিতে কথা বলতে দেওয়া হয় না। সংখ্যা গরিষ্ঠের ভিত্তিতে তারা উপাচার্যের পদত্যাগের মতো একটা অযৌক্তিক দাবি নিয়ে ক্যাম্পাসের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চাইছে। বর্তমান চবি প্রশাসন সুষ্ঠু নিয়মে আইন মোতাবেক তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে দাবি করেন তিনি।

সমাবেশে পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক শ্যামল রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, শিক্ষক সমিতি উপাচার্যের পদত্যাগ চায়। কিছু ভিত্তিহীন দাবি নিয়ে তারা আজ প্রশাসন ও শিক্ষক সমাজের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে চায়।

আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রকিবা নবী বলেন, তারা শিক্ষকদের স্বার্থ নিয়ে কাজ করছে না। তারা শুধু প্রশাসনের ভুল ধরতে ব্যস্ত। তারা ক্ষমতায় যেতে ব্যস্ত। শিক্ষক সমিতি তার দায়িত্ব বাদ দিয়ে নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত। আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে কোনো আইনের লঙ্ঘন হয়নি। আইন মোতাবেক সকল নিয়ম মেনে এটার বোর্ড আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু, একটি ন্যায় ও ন্যায্য নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করতে শিক্ষক সমিতির একাংশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। এটা খুবই লজ্জাজনক।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রাহমান নাসির উদ্দিন বলেন, শিক্ষক সমিতি কাদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। তারা এই নির্বাচনকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশকে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে রাখতে চাইছে। তাদের সব কর্মকাণ্ড খুবই ন্যাক্কারজনক। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষক হিসেবে আমরা শিক্ষক সমিতির এমন অযৌক্তিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আমরা এই মানববন্ধন আয়োজন করেছি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর