চবিতে বিশেষ ক্ষমতায় শিক্ষক নিয়োগ, উপাচার্য-শিক্ষক সমিতির দ্বন্দ্ব

, ক্যাম্পাস

চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-12-18 10:15:48

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বাংলা বিভাগ ও আইন বিভাগের পরিকল্পনা কমিটিকে উপেক্ষা করে এ দুই বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড এর আহ্বান করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। শিক্ষক সমিতির নেতারা এ নিয়ে প্রতিবাদ জানালে প্রত্যক্ষ দ্বন্দ্বে জড়ান উপাচার্য ও শিক্ষক সমিতির নেতারা।

রোববার (১৭ ডিসেম্বর) দিনভর এ নিয়ে ক্যাম্পাসে চরম উত্তেজনা বিরাজ করেছে।

গতকাল রোববার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষক আইন বিভাগ ও বাংলা বিভাগের নিয়োগ বোর্ড বাতিলের দাবিতে চিঠি দিতে উপাচার্য কার্যালয়ে যান। এ সময় উপাচার্যের উপস্থিতিতে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী চিঠি পাঠ করার এক পর্যায়ে উপাচার্য উত্তেজিত হয়ে পড়েন। উপাচার্যপন্থী শিক্ষক ও শিক্ষক সমিতির শিক্ষকরা চরম বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপাচার্য দপ্তরে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।

এ সময় প্রশাসনপন্থী শিক্ষকরা কয়েক দফায় উপাচার্য দপ্তরে উপস্থিত সাংবাদিকদের বাইরে বের করে দেয়ার চেষ্টা করেন। প্রশাসনপন্থী এসব শিক্ষকরা প্রশাসন মনোনীত বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ঘটনার পর শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষক দুপুর ২টা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা উপাচার্য দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।


পরে সন্ধ্যায় শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে কর্মসূচি ঘোষণা করে চবি শিক্ষক সমিতি। এ সময় উপাচার্য কাউকে না জানিয়ে গোপনে নিজ বাংলোতে শিক্ষক নিয়োগ প্রার্থীদের ভাইবা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষক সমিতির নেতারা। কর্মসূচির অংশ হিসেবে পদত্যাগের একদফা দাবিতে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষকরা দুই ঘণ্টা অবস্থান নিবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, 'কাউকে কিছু না জানিয়ে বাংলোতে গিয়ে ভাইভা নেওয়াটা নজিরবিহীন ঘটনা। এর আগেও আমরা বিভিন্ন যৌক্তিক দাবিদাওয়া জানিয়ে আসছি। তবে প্রশাসন সেদিকে কর্ণপাত করেনি। অন্যায়কে বাস্তবায়ন করার জন্য আজ যে গর্হিত কাজ উপাচার্য করেছে তা আইনের পরিপন্থি। এই ঘটনায় উপ-উপাচার্যেরও দায় আছে বলে মনে করি।' 

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হক বলেন, 'আমরা উপাচার্যকে বোঝানোর জন্য গেলে তিনি কথা পর্যন্ত বলেননি। একপর্যায়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতির সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।' 

আইন বিভাগের অধ্যাপক এবিএম আবু নোমান বলেন, 'সিলেকশন বোর্ডের মেম্বার ও প্রার্থীকে একই গাড়িতে করে উপাচার্য দপ্তর ত্যাগ করতে দেখা গেছে যা আইন বহির্ভূত। প্রার্থীর সাথে বোর্ড মেম্বারদের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না। যদি থাকে, তা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে।' 

তবে এ বিষয়ে জানার জন্য উপাচার্য ও নিয়োগ বোর্ড সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিদের সাথে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করা হলেও তারা সাড়া দেননি।

এদিকে, আজ সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলা বিভাগের অনুষ্ঠিতব্য নিয়োগ-বোর্ড থেকে চার সদস্যের মধ্যে দুইজন অংশ নিবেন না জানিয়ে উপাচার্য বরাবর এক চিঠি দিয়েছেন। এ দুইজন হলেন, বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. তাসলিমা বেগম ও বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. মহিবুল আজিজ। পরিকল্পনা কমিটির সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করার কারণে তারা নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত থাকবেন না বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর