কুবি ছাত্রলীগের কর্মীসভা: নেতৃত্বে আলোচনায় এগিয়ে যারা

, ক্যাম্পাস

কুবি করেসপন্ডেন্ট বার্তা ২৪.কম কুমিল্লা  | 2023-10-05 17:50:10

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সর্বশেষ (ইলিয়াস-মাজেদ) কমিটি বিলুপ্তির সাত মাস পর কর্মী সমাবেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে আগামী ৯ অক্টোবর (সোমবার) কর্মীসভা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কুবি শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দরা।

এই কর্মীসভাকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিশ্ববিদ্যালয় ও আশেপাশের এলাকায় ব্যানার ফেস্টুন দেখা যাচ্ছে তাদের।

গুরুত্বপূর্ণ পদে আসার জন্য কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া অনেকের নামই আসছে আলোচনায়। এ তালিকায় আছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের প্রথম পূর্ণাঙ্গ কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-ইলাহী, সাবেক সহ-সভাপতি এইচ. এম. মেহেদী হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বজন বরণ বিশ্বাস, কাজী নজরুল ইসলাম হলের সাবেক সভাপতি ইমরান হোসাইন, বিগত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মু. রকিবুল হাসান রকি, মো. ইকবাল হোসেন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদাত সায়েম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের যুগ্ম সম্পাদক মুমিন শুভ, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ, কাজী নজরুল ইসলাম হলের সভাপতি নাজমুল হাসান পলাশ, নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের সভাপতি ইসরাত জাহান জেরিন, ছাত্রলীগ নেতা তাহারাতবির হোসেন পাপন মিয়াজী, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুর বিশ্বাস। তবে কে কোন পদের প্রত্যাশা করছেন সেটি তারা প্রতিবেদকের কাছে স্পষ্ট করেননি।

কুবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক সহসম্পাদক রেজা-ই-ইলাহী বলেন, 'কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতৃত্বে বাছাই করবে যোগ্যতা, দলীয় মতাদর্শ, সেক্রিফাইজ, ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে শুরু করে দলের প্রতি কতটুকু নিবেদিত এই বিষয়গুলো দেখে। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মতামত নিয়ে ছাত্রলীগ নেতৃত্ব বাছাই করবে।'

তিনি বলেন, 'আমি যদি আসতে পারি প্রথমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ সুষ্ঠ থাকে, বিশৃঙ্খলা না হয়। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে যেকোনো সহযোগিতায় শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবো। দলীয় রাজনীতির কথা চিন্তা করলে শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় রাখতে পারি সেই অনুযায়ী যে নির্দেশনা আসবে সেগুলো করবো। আমাদের স্থানীয় নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে কাজ করবো।'

স্বজন বরণ বিশ্বাস বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অপশক্তির মাথাচাঁড়া দেওয়া রোধ করবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২১ এবং ৪১ এর মিশন ও ভিশন, সেই সাথে স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষে স্মার্ট ছাত্রলীগ কাজ করে যাবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পরিবেশ যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেই বিষয়েও কাজ করে যাব।

এইচ. এম. মেহেদী হাসান বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর খুব বেশি দিন বাকি নেই। আ.লীগ সরকারের বিরুদ্ধে চলমান দেশী-বিদেশী অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র মোকেবেলায় আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তারুণ্যের ভোট ব্যাংক যাতে দেশরত্ন শেখ হাসিনার পক্ষে যায় সে লক্ষে ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিকট জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের বিগত ১৫ বছরের শিক্ষাবান্ধব উন্নয়নমূলক কাজের বার্তা পৌঁছে দিতে চাই।

মু. রকিবুল হাসান রকি বলেন, 'জাতির জনকের আদর্শ ধারণ করে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষে স্মার্ট সিটিজেন তৈরী করতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য সর্বদা রাজপথে সোচ্চার থাকবো।'

মো. ইকবাল হোসাইন খান বলেন, 'আমার নিজস্ব জায়গা থেকে নেতৃত্ব স্থানে যাওয়ার সুযোগ হলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. এ.এফ.এম. আবদুল মঈন স্যার এবং প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের জন্য সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাব।'

আবু সাদাৎ মোহাম্মদ সায়েম বলেন, 'শিক্ষা, শান্তি ,প্রগতির পতাকাবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্বপ্নের স্মার্ট সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করে যাব। বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মৌলিক এবং যৌক্তিক দাবি আদায় ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার সোচ্চার থাকবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ । বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য আমরা সর্বদা প্রস্তুত আছি।'

ইমরান হোসাইন বলেন, 'আমাদের প্রথম প্রত্যাশা, গঠনতন্ত্রের বাইরে থেকে যেন নেতৃত্ব না আসে। যারা শিক্ষার্থী বান্ধব এবং স্মার্ট বাংলাদেশের শেখ হাসিনার যে ঘোষণা তা বাস্তবায়নে যারা ক্যাম্পাসে দীর্ঘ সময় কাজ করেছে এবং যারা দক্ষতার ভিত্তিতে কাজ করেছে সেই বিষয়গুলো দেখা। যারা শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় আনতে চায় তাঁরা নেতৃত্বে আসুক। নেতৃত্বে তাঁরাই আসুক যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের অরাজকতাসহ অন্যান্য বিষয়গুলো নিরসনে কাজ করবে।'

এনায়েত উল্লাহ বলেন, 'আমরা ছাত্রলীগের কমিটিতে এমন শিক্ষার্থীদের চাই, যারা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছে। সাধারন শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করেছে, ছাত্রদের জন্য কাজ করছে। এই ক্যাম্পাস যেন অস্ত্রাগার না হয়ে ফুলের বাগান হয়। তাছাড়া ভবিষ্যত নির্বাচনকে সামনে রেখে যারা শেখ হাসিনার আদর্শকে ছড়িয়ে দিতে পারবে। নির্বাচনে নৌকা যেন পাস হয় সেই লক্ষে কাজ করবে তাদের মধ্য থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যত নেতৃত্ব যেন বাছাই করে।'

নাজমুল হাসান পলাশ বলেন, 'আমরা দীর্ঘদিন যারা এখানে রাজনীতি করেছি আমরা চাই যোগ্য, স্মার্ট, মেধাবী, সাংগঠনিক এমন কাউকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ নির্বাচন করুক। যাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আছে এবং যারা নেতৃত্বে এলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পারবে, ছাত্রলীগের কর্মী বাড়বে এমন কাউকেই কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ নির্বাচন করবে বলে আমাদের আস্থা আছে।'

ছাত্রলীগ নেতা তাহারাতবির হোসেন পাপন মিয়াজী বলেন, 'বিগত সময়গুলোতে যারা শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে শিক্ষার্থীদের সাথে গঠনমূলক প্রগতিশীল চর্চায় সম্পৃক্ত ছিলো তাদের থেকেই গঠনতান্ত্রিকভাবে মেধাবী পরিশ্রমী ও গ্রহনযোগ্য স্মার্ট ছাত্রনেতাদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হউক। একজন ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে আমি চাই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ হবে স্মার্ট ও নিরাপদ। যেখানে শিক্ষার্থীরা শতভাগ স্বাধীনভাবে ক্যাম্পাসে চলাফেরা করবে। আমরা চাইনা অস্ত্রের ঝনঝনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কোন মায়ের বুক খালি হোক।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর