শোক আর মাতমের মধ্য দিয়ে শেষ হল তাজিয়া মিছিল

, ক্যাম্পাস

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-28 07:59:55

 

আজ হিজরি বছরের প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখ পবিত্র আশুরা, যা মুসলিম বিশ্বে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক। আর এ উপলক্ষে শিয়া সম্প্রদায় শোক আর মাতমের মধ্য দিয়ে এ বছরের তাজিয়া মিছিল শেষ হল।

মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর হোসেনি দালান থেকে কারবালার মর্মান্তিক শোকের স্মরণে তাজিয়া মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি হোসেনি দালান ইমামবাড়ি থেকে তাজিয়া মিছিলটি শুরু হয়ে বকশীবাজার রোড, নিউমার্কেট হয়ে ধানমন্ডি লেকের ‘প্রতিকী কারবালা’ প্রাঙ্গণে গিয়ে সকলে একসাথে নামাজ আদায়-জিকির-দোয়ার মাধ্যমে তাজিয়া মিছিলের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।

এর আগে অনুষ্ঠিত মিছিলে উপস্থিত বেশিরভাগই মানুষই কালো পোশাকে পরে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ মাতম করছে। বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারও দেখা গেছে মিছিলে। মিছিলের মূল আয়োজনে ছিল হোসেনি দালান ইমামবাড়া ব্যবস্থাপনা কমিটি।

তাজিয়া মিছিল সাজানো হয়েছে কারবালার শোকের নানা প্রতিকৃতি দিয়ে। বিবি ফাতেমার স্মরণে মিছিলের শুরুতেই দুটি কালো গম্বুজ বহন করা হচ্ছে। অংশগ্রহণকারীরা বহন করছেন বিভিন্ন নিশান। কারবালার রক্তাক্ত স্মৃতির স্মরণে মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা সাধারণত নিজের দেহে ছুরি দিয়ে আঘাত করে রক্ত ঝরিয়ে মাতম করেন। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের অনুরোধে গত কয়েকবছর ধরেই ছুরি দিয়ে মাতম করা হচ্ছে না।


মিছিলে দুটি ঘোড়া রয়েছে, যার মধ্যে একটিকে রং দিয়ে রক্তের রূপ দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ইমাম হোসেন যখন কারবালায় যান তখন ঘোড়াটি এক রকম থাকে, আবার যুদ্ধের শেষে রক্তাক্ত ঘোড়ার অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। তাজিয়া তৈরি করা হয়েছে ইমাম হোসেনের সমাধির আদলে। রাজধানীর আশেপাশে থেকে আগত অনেক মানুষ এ মিছিলে অংশ নেয়।

মিছিলকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মত। ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকার হোসাইনী দালানে পবিত্র আশুরার তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় বোমা হামলায় দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হন। এর পর থেকে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে রেখে তাজিয়া মিছিল পরিচালনা করা হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), র‌্যাব ও বিভিন্ন স্তরের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে মিছিলকে ঘিরে।

এ বছর সুষ্ঠুভাবে তাজিয়া মিছিল সম্পন্ন করতে দা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি বহন নিষিদ্ধ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একই সঙ্গে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, হিজরি বছরের প্রথম মাস মহররমের ১০ তারিখ, পবিত্র আশুরা। এই দিনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা:) এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসেন (রা.) ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে শহীদ হন। যা মুসলিম বিশ্ব কারবালার ঘটনাকে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক। এই দিনে শিয়া সম্প্রদায়ের মুসল্লিরা ত্যাগ ও শোক পালনে তাজিয়া মিছিলের আয়োজন করে থাকে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর