এক বিষয়ে পরীক্ষা না দিয়ে মিলেছে স্নাতকোত্তর সনদ!

, ক্যাম্পাস

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 10:29:07

সব পরীক্ষা শেষে স্নাতকোত্তর সনদ পাবার কথা, তবে একটি পরীক্ষায় না বসেও মিলেছে স্নাতকোত্তর সনদ। এমনটাই ঘটেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী সঙ্গে।

জানা যায়, স্নাতকোত্তর ২০১৬-১৭ সেশনের ঢাকা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শ্রেণির শিক্ষার্থী সানাউল্লাহ। ২০২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। পরীক্ষা চলাকালীন গেল বছরের (২০২১ সালের) ২৯ জানুয়ারি সানাউল্লাহর মা মারা যাওয়াতে গ্রামের বাড়িতে ছিলেন। ফলে ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ‘ভূরাজনীতি ও বাংলাদেশ’ বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি তিনি। পরে ঢাকায় ফিরে বাকী পরীক্ষায় অংশ নেন সানাউল্লাহ। ঢাকা সানাউল্লাহ নিশ্চিত ছিলেন যে পরের বছর পরীক্ষা দিয়ে তাকে পাস করতে হবে। তবে ঘটনা ঘটলো উল্টো৷ ফলাফল প্রকাশের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার নামে মূল একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট এবং সাময়িক সনদপত্র ঢাকা কলেজে পৌঁছেছে।

৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন থেকে সাময়িক সনদপত্রটি ইস্যু হয়। প্রবেশপত্রে মোট ৯টি বিষয়ের নাম উল্লেখ থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো মূল গ্রেড সার্টিফিকেটে মোট ৮টি বিষয়ের নাম উল্লেখ করা আছে৷ সানাউলাহ যে বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নেননি সেই বিষয়ের নাম উল্লেখ নেই। বাকী আটটি বিষয় উল্লেখ করেই ফলাফল পাস আর জিপিএ ২.৭০ দেখানো হয়েছে৷

এ ব্যাপারে সানাউল্লাহ বলেন, একটি বিষয়ের পরীক্ষায় অংশই না নিয়ে পাস করেছি এ ফলাফলে সন্দেহ হলে আমি ঢাবিতে যোগাযোগ করি৷ সেখান থেকে বলা হয় বিশেষ পরীক্ষায় অংশ নিতে৷ কিছুদিন আগে আমি ওই বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি৷ এখনও ফালাফল প্রকাশ হয়নি। গত ২০ মার্চ ওই বিষয়ে বিশেষ মানোন্নয়ন পরীক্ষায় অংশ নেন সানাউলাহ৷ যদিও তার পাসের সনদ ঢাকা কলেজে!

এ দিকে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. স ম আলী রেজা’র সাথে কথা হলে তিনি জানান, হাজার হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে তো এরকম ভুল মাঝে মধ্যে হয়৷ আমরা এটা সংশোধন করি। কন্ট্রোলার অফিস অসতর্কতাবশত মার্কসিট প্রোভাইড করে ফেলেছে৷ একটা ভুল হয়েছে, ওটা এখন উইথড্র করতে হবে৷

পরীক্ষা কমিটির টেবুলেটর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আইনুল ইসলাম বলেন, এরকমটা আসলে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে বা আমাদেরও রেগুলার যেগুলো আছে এগুলোতে টুকটাক ভুল হয়ে থাকে। পরে আমরা সংশোধন করে দেই৷ একটা ভুল হতেই পারে৷ সেটা আমরা সংশোধন করে দিয়েছি৷

এ বিষয়ে জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরীকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁকে পাওয়া যায় নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজের প্রধান সমন্বয়কারী ও ঢাবির উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, বিষয়টা আমরা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে যাদের মাধ্যমে ভুল হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিতে বলেন, এ ধরনের ভুল হওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়৷ কারা ফলাফল তৈরি করল, সংশ্লিষ্ট কে কে আছেন, এগুলো খতিয়ে দেখা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর