জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ২০১৮-১৯ সেশনে প্রথম বর্ষে ভর্তিচ্ছু এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। হয়রানির শিকার ছাত্রী সি-১ ইউনিটে চারুকলা বিভাগে ভর্তিচ্ছু।
বুধবার (৩১ অক্টোবর) ভর্তিচ্ছু ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। অভিযুক্ত নাসিম ঐশ্বর্য চারুকলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের (৪৫ব্যাচের) শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
অভিযোগপত্রে ভর্তিচ্ছু উল্লেখ করেন, ‘আমি ঐশ্বর্যের কাছে ড্রয়িং শিখতে ভর্তি হই। এই জন্য গত ২৯ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর আমাকে ড্রয়িং শেখানোর নামে বিভিন্ন যায়গায় নেওয়ার পর সর্বশেষ জিমনেসিয়ামের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যান। সেখানে আমি বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানির শিকার হই।’
অভিযোগপত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘ঐশ্বর্য ড্রয়িং শেখানোর নামে বারবার আমার বুকে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে। আমি নিষেধ করার পর তিনি আমাকে বলেন, এটাই শেখানোর নিয়ম। এরপর ঐশ্বর্য তাঁর শরীরের গোপনাঙ্গ দেখিয়ে ছবি আঁকতে বলেন। এমন পরিস্থিতিতে আমি বিভ্রান্ত হয়ে আমার বাবা ফোন করেছে, এমন অজুহাতে সেখান থেকে চলে আসি।’
অভিযোগকারী ছাত্রীর স্থানীয় এক অভিভাবকের সাথে যোগাযোগ করা হলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নাসিম ঐশ্বর্য বলেন, ‘আমি আসলে মানসিকভাবে দুর্বল ছিলাম। আমার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ স্বীকার করছি। আমি আমার দুর্বলতার জন্য সকলের নিকট ক্ষমাপ্রার্থী। এছাড়া আমি ঐ ছাত্রীর কাছেও ক্ষমা চেয়েছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো। তবে ছাত্রী চাইলে রাষ্ট্রীয় আইনের আশ্রয় নিতে পারে।’
প্রক্টর বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ভর্তিচ্ছুদের পড়ানোর কোন নিয়ম নেই। সে ভর্তিচ্ছুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে পড়িয়ে আরো একটি নিয়ম ভঙ্গ করেছে। নিয়ম ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে চারুকলা বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক এম. এম. ময়েজ উদ্দিন বলেন, ‘ঘটনাটি জেনেছি। এটি আমার বিভাগের জন্য লজ্জাজনক।’