কেউ কী কাঁদছে

গল্প, শিল্প-সাহিত্য

তানিয়া চক্রবর্তী | 2023-08-29 11:12:20

ভোর হয়, ঈশান ঘুম থেকে উঠে দেখে কোথাও নেহা নেই। সারাবাড়ি খুঁজে নেহাকে পায়না ঈশান। বাথরুমের দেয়ালে বহুদিনের শুকিয়ে যাওয়া রক্তের দাগ। কিছু বুঝতে না পেরে ঈশান বাইক নিয়ে বেরিয়ে যায়। একবার থানায় যাবে বলে ঠিক করে। রাস্তায় আগেরদিনের লোকটার সঙ্গে দেখা হয়। তাকে হাত ধরে ঈশান জিজ্ঞাসা করে “ দাদা, আমি আমার বান্ধবী নিয়ে কাল ঐ বাড়িতে এসেছিলাম। সকাল থেকে ওকে পাচ্ছিনা। এমনকি ওর কোনো জিনিসই পাচ্ছিনা। যেন মনে হচ্ছে আমি একা এসেছি” । লোকটা জিজ্ঞাসা করে “ সে কী আপনি মেয়ে মানুষ নিয়ে ঐ বাড়িতে ঢুকেছেন? কাল যে বললেন বন্ধুরা আড্ডা দেব? ঐ বাড়ির পাশ দিয়ে আমরা পোয়াতি(প্রেগনেন্ট) মহিলাদের নিয়েও যাইনা, তাহলে সে পেটের বাচ্চাও মারা যায়। আর যুবতী মেয়েমানুষ হলে তো কথাই নেয়”।

ঈশান চীৎকার করে বলে “কী বলছেনটা কী আপনি?আপনি বলুন থানা কোথায় সামনে। আর আমার বান্ধবীর কিছু হয়নি , বুঝলেন। ও বোধহয় মজা করছে আর নয়তো কোনো খারাপ লোকের পাল্লায় পড়েছে”

ভদ্রলোক বলেন “ কাল রাতে কখন আপনার সঙ্গে ওনার শেষ কথা হয়?” ঈশান বলে “ ও একটু ভয় পেয়ে কীসব বলছিল, ওটাই লাস্ট” ভদ্রলোক ঈশানের হাত ধরে বলে “ আমায় ক্ষমা করুন ভাই, তবু বলছি উনি আর ফিরবেন না । ওখানে যে মেয়েরাই যায় নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। ওটা এক খুনীর বাড়ি। এক মহিলা তার স্বামী , সন্তানকে ঐ বাড়িতে কুঁপিয়ে খুন করে। তারপর অনেকদিন পাগল হয়ে ঐ বাড়িতেই ছিল।শেষে নিজেও আত্মহত্যা করে। কেন, কী কেউ জানে না। এওখানকার পুরোনো লোকদের মুখে এই গল্প শুনেছি। তারপর এখানে অনেক অঘটন ঘটেছে। বাচ্চা মেয়েরা খেলতে গিয়ে ফিরে আসেনি। এমন কতো! রাতের বেলা ঐখানে এক অভিশপ্ত কান্না শুনতে পাওয়া যায়”।

এসব শুনে ঈশান একবারে শান্ত হয়ে মাটিতে বসে পড়ে। লোকটা নির্বিকার চলে যেতে থাকে।নিরুদ্দেশ মেয়ে হিসেবে কাগজের পাতায় নেহার ছবি ছাপা হয়...

 

এ সম্পর্কিত আরও খবর