বহিষ্কার করায় সাংসদকে রাজাকারের স্ত্রী বললেন সেই নেত্রী
দল থেকে বহিষ্কার করায় নাটোর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য রত্না আহমেদকে রাজাকারের স্ত্রী বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠন থেকে সদ্য বহিষ্কার হওয়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা শিল্পী।
বহিষ্কার আদেশে অপর স্বাক্ষরকারী সাধারণ সম্পাদক বিউটি আহমেদকে চাঁদাবাজ হিসেবে মন্তব্য করে নিজেকে তাদের ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেছেন।
তার দাবি, আগামীতে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দেওয়ায় সভাপতি-সম্পাদকের রোষানলে পড়েছেন তিনি। সংগঠনের গঠনতন্ত্র মেনে তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়নি উল্লেখ করে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নাটোর শহরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন শামীম আরা শিল্পী।
তিনি জানান, তাকে বহিষ্কার করার পুরো ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। সংগঠনের সভাপতি-সম্পাদক দলে সময় না দেওয়ায় তিনি সর্বস্তরের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। এতে দিনদিন তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কর্মীদের অনুরোধে আগামী সম্মেলনে তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এটি ভালোভাবে নেননি তারা। দীর্ঘ এক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করে অসামাজিক কাজসহ চাঁদাবাজির অভিযোগ করা হয়েছে। ভিত্তিহীন এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সংসদ সদস্য রত্না আহমেদের প্রয়াত স্বামী মুক্তিযোদ্ধা আহমদ হোসেন চম্পাকে রাজাকার মন্তব্য করে করে শিল্পি বলেন, 'বিগত সংসদ নির্বাচনে আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। কিন্তু তখন বর্তমান কমিটির সভাপতি রত্না আহমেদের অনুরোধে আমি সরে আসি। এর প্রতিদানে তিনি আমাকে বহিষ্কার করেছেন।'
সংবাদ সম্মেলনে শামীম আরা শিল্পির ও তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শিল্পির বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সংরক্ষিত আসন-৩৪৩ এর সংসদ সদস্য রত্না আহমেদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, 'আমার স্বামী প্রয়াত আহমদ হোসেন চম্পা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, যা সর্বজনবিদিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলে অবদান ও যোগ্যতা বিবেচনা করে আমাকে মনোনয়ন দিয়ে সংসদে নিয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল না তখন নাটোরের ঘরে ঘরে আমি মহিলা আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করেছি। বহিষ্কারের ক্ষোভ থেকে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে রাজাকার বলে শিল্পি চরম অন্যায় করেছেন।' ভবিষ্যতে এমন অপরাধ থেকে বিরত না থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, নৈতিক স্খলন, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের অভিযোগে গত ২২ সেপ্টেম্বর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ সাধারণ সদস্যপদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয় শামীম আরা শিল্পিকে।
আরও পড়ুন: চাঁদাবাজির অভিযোগে নাটোরে মহিলা আ'লীগ নেত্রী বহিষ্কার